বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের আলোচনা :  গাজা যুদ্ধে প্রথম দুই মাসে পরিবেশের ক্ষতি  ২০টি দেশের বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের সমান  

লন্ডন, ৪ মে ২০২৪:  ||

 জলবায়ু পরিবর্তনের সংকটকালে পরিবেশগত বিপর্যয় রোধে গণমাধ্যমের বিশাল ভূমিকা রয়েছে । বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে  'পরিবেশ সংকটে সাংবাদিকতা' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলার পাশাপাশি পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য কর্মক্ষেত্রের স্বাধীনতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
৩ মে, শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব অফিসে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  এতে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সিনিয়র সাংবাদিক, প্রথম আলোর  সাবেক কনসাল্টিং এডিটর কামাল আহমেদ ও এটিনএন বাংলার প্রেজেন্টার মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ঊর্মি মাজহার ।

প্রেস ক্লাবের জেনারেল সেক্রেটারি ও সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক তাইসির মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জুবায়ের।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক কামাল আহমেদ বলেন, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস বিষয়ে আলোচনা করার আগে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মরণ করা এবং তাদের হত্যার বিচারের দাবি জানানো বেশি প্রয়োজন। 
তিনি বলেন, গাজা এবং ইসরাইলের সংঘাতে গাজায় যতজন সাংবাদিক মারা গেছেন এক দশকেও তত সাংবাদিক মারা যাননি।  গাজা-ইসরাইল সংঘাত
 বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কী পরিমান প্রভাব পড়ছে সেই বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের কুইন মেরি কলেজের এক গবেষণার কথা তুলে ধরে কামাল আহমেদ জানান, গাজা যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে আকাশপথে বা সাগরে উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ক্ষতিকর কার্বন গ্যাসের যতটা উদ্‌গিরণ ঘটেছে, তা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা ২০টি দেশের বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের সমান। 
সাংবাদিক কামাল আহমেদ আরো বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সাংবাদিকতা করতে গিয়ে বাংলাদেশে অন্তত ১০ জন সাংবাদিক ক্ষমতাসীনদের প্রভাবে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। 

সাংবাদিক ও টিভি প্রেজেন্টার উর্মি-মাজহার বলেন, পরিবেশ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা অনেক সময় প্রতিবন্ধকার শিকার হন । কখনো কখনো সমাজের রাঘব বোয়ালরা এমনকি সরকারও এর প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিকদের নির্যাতনের উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি । উর্মি-মাজহার আরো বলেন, পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকতার জন্য পড়াশোনার প্রয়োজন রয়েছে।  

ক্লাব প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জুবায়ের বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সর্বক্ষেত্র থেকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে সাংবাদিকতার পাশা-পাশি টিভিতে লাইভ প্রোগ্রাম ও কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। 

ক্লাব সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা আমাদের অধিকার । তবে সৎ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাও সময়ের দাবী । সাংবাদিকতা পেশায় অর্ধসত্য মিথ্যার চেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়ায়।  তিনি কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) এর সাম্প্রতিক প্রকশিত তথ্য উল্লেখ করে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩ মে পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৯৭জন সাংবাদিক মারা গেছেন । এরমধ্যে ৯২জনই হচ্ছেন ফিলিস্তিনী সাংবাদিক। 

অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসিক দর্পণ সম্পাদক রহমত আলী, কবি ও সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, বায়ান্ন বাংলা টিভির এডিটর আনোয়ারুল ইসলাম অভি, কবি ও কমিউনিটি নেতা মজিবুল হক মনি, ক্লাবের সাবেক নির্বাহী সদস্য আহাদ চৌধুরীর বাবু  ও সদস্য জি আর সোহেল। 

আলোচনা শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী । অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের গাজায় নিহত সাংবাদিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়‌।

অনুষ্ঠানে ক্লাবের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি রেজাউল করিম মৃধা, অর্গানাইজিং এবং ট্রেনিং সেক্রেটারি আকরামুল হোসাইন, মিডিয়া এবং আইটি সেক্রেটারি মোঃ আব্দুল হান্নান, এক্সিকিউটিভ মেম্বার আনোয়ার শাহজাহান ও ফয়সল মাহমুদ। অনুষ্ঠান শেষে ক্লাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক কামাল আহমদের হাতে কিছু উপহার তুলে দেওয়া হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন