ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ইসরায়েলের নতুন আদেশ

ফিলিস্তিনিদের রাফাহর পূর্বাঞ্চল ও গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশে আরো এলাকা যুক্ত করা হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবার নতুন এ আদেশ দেয়। তারা সেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই অঞ্চলের কিছু বাসিন্দা এএফপিকে বলেছেন, তারা তাদের ফোনে পাঠ্য ও অডিও বার্তার মাধ্যমে সর্বশেষ সরে যাওয়ার আদেশ পেয়েছে। গাজার বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুতদের রাফাহ শহরের শাবুরা শরণার্থীশিবিরের কিছু অংশ, প্রশাসনিক এলাকা জেনিনা এবং খিরবেত আল-আদাস এলাকা ছেড়ে আল-মাওয়াসির উপকূলীয় ‘মানবিক এলাকায়’ যেতে বলা হয়েছে। এর কয়েক দিন আগে ইসরায়েলি ট্যাংক ও সেনারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দক্ষিণতম শহর রাফাহতে প্রবেশ করে এবং মিসরীয় সীমান্তের একটি মূল ক্রসিং দখল করে। অন্যদিকে সাহায্যকারী গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এলাকাটিতে ইতিমধ্যে প্রচুর মানুষ আশ্রয় নিয়েছে, এখন নতুন করে লোকজনের আগমনের জন্য প্রস্তুত নয়।

 

গণমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র আভিচায় আদ্রেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে আরবি ভাষায় আদেশটি পোস্ট করে বলেছেন, এই অঞ্চলগুলো ‘সাম্প্রতিক দিন ও সপ্তাহগুলোতে হামাসের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাক্ষী ছিল’। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ছবিগুলোতে সর্বশেষ আদেশসহ লিফলেটগুলো দেখা যায়, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে বলে সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে।

এ ছাড়া রাফাহর একটি হাসপাতালের পরিচালক সুহাইব আল-হামস সাংবাদিকদের এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘দুঃখজনকভাবে কুয়েত স্পেশালিটি হাসপাতালটি এখন স্থানান্তরের হুমকির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই হাসপাতাল ছাড়া রোগী ও আহতদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।

’ তিনি চিকিৎসা সুবিধার জন্য ‘অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সুরক্ষা’র আহ্বান জানিয়েছেন।

 

এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সোমবার রাফাহর পূর্বাঞ্চলে স্থানান্তরের প্রথম আদেশ জারি করে বলেছিল, তারা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত স্থল হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বারবার রাফাহতে স্থল সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানে গাজার ২৪ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েলের মতে, দক্ষিণের এই শহরে হামাসের চারটি ব্যাটালিয়ন রয়েছে, যা ভেঙে ফেলা দরকার।

 

আদ্রেই তার বিবৃতিতে জানান, উত্তর গাজার জাবালিয়া ও বেত লাহিয়ায়ও ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করা হয়েছে, যে অঞ্চলগুলো সাত মাসের যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে তীব্র লড়াই দেখেছে। তিনি বলেন, ‘আপনি একটি বিপজ্জনক যুদ্ধ অঞ্চলে আছেন। হামাস এলাকায় তাদের সক্ষমতা পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। তাই আইডিএফ (সেনা) এলাকায় সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যাপক শক্তি নিয়ে কাজ করবে।’

উল্লেখ্য, ২৭ অক্টোবর স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী বারবার জাবালিয়া ও বেইট লাহিয়া, পাশাপাশি উত্তর গাজার অন্যান্য অংশকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির সমীক্ষা অনুসারে, সেই হামলায় এক হাজার ১৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। অন্যদিকে হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে গাজায় কমপক্ষে ৩৪ হাজার ৯৪৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন