জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ঘুষের বিনিময়ে সরকারি কাজ নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকে দেয়ার অভিযোগে পেরুর প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকারা দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসিত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) পেরুর এই প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ভোট দেন।
২০১৪ সালে পেরুর দক্ষিণের মোকুগুয়া অঞ্চলের মেয়রের দায়িত্ব পালনের সময় ডেভেলপারদের কাছ থেকে ৬ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ ওঠার পর তার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে বারবারই তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এমন তথ্য মিলেছে।
ভিজকারা বলেছেন, তিনি সংসদ সদস্যদের ভোটের রায় মেনে নেবেন এবং এর বিরুদ্ধে কোনও ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন না। শিগগিরই প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ছেড়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রায় আট ঘণ্টার অভিশংসন বিচারের পর জনপ্রিয় এই প্রেসিডেন্টকে সরানোর পক্ষে ১০৫ পার্লামেন্ট সদস্য ভোট দেন। বিরোধিতা করেন ১৯ আর অনুপস্থিত ছিলেন চারজন।
দেশটিকে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে হলে ৮৭ ভোটের দরকার পড়ে। কংগ্রেস নেতা ম্যানুয়েল ম্যারিনো বলেন, প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য ঘোষণা করতে প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছিল। এখন সাংবিধানিকভাবে সেই দায়িত্ব পালন করবেন ম্যানুয়েল ম্যারিনো।
প্রেসিডেন্টের দুর্নীতি ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে পেরুতে রাজনৈতিক সঙ্কট চলছে। গত দুই মাসে প্রেসিডেন্ট ভিজকারাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পার্লামেন্টে অন্তত দু’বার উদ্যোগ নেয়া হয়।
পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে অভিশংসনের যেকোনও পদক্ষেপ দেশকে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ফেলে দিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ভিজকারা। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশের অর্থনীতি ইতোমধ্যে তীব্র মন্দার কবলে পড়েছে।
কিন্তু সোমবার দেশটির পার্লামেন্টের ১০৫ সদস্য প্রেসিডেন্ট ভিজকারাকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। এছাড়া বিপক্ষে ভোট দেন পার্লামেন্টের মাত্র ১৯ জন সদস্য। ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন চারজন।
তবে মাথা উঁচু করেই ক্ষমতা থেকে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্টিন ভিজকারা। কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুই বছর আট মাস আগে ক্ষমতা গ্রহণের পর মাথা উঁচু করেই আমি সরকারি প্রাসাদ ছাড়ছি। শিগগিরই তিনি নিজের বাড়িতে গিয়ে উঠবেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিন আমেরিকান দেশটির সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। তবে রাজধানী লিমাসহ অন্যান্য শহরে তার সমর্থনে লোকজনকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন