'লেডি ডাক্তার' খ্যাত সুনামগঞ্জের প্রথম নারী এমবিবিএস-চিকিৎসক ও সিলেটের মাতৃমঙ্গল হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাকালীন চিকিৎসক ডা. সালেহা খাতুন (৮৮) আর নেই। গত বুধবার রাতে সিলেট নগরীর কুমারপাড়ায় নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার আসরের নামাজের পর হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহস্থ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ বহু আত্মীয় গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সিলেট অঞ্চলের এই প্রবীণ নারী চিকিৎসকের জীবনাবসানের মধ্য দিয়ে একটি যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো। তিনি ব্রিটিশ শাসনাধীন পূর্ববঙ্গে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর তৎকালীন সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ মহকুমায় জন্মগ্রহণ করেন। সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগরস্থ 'বখত বাড়ি'তে জন্মগ্রহণকারী ডা. সালেহা খাতুনের পিতা মরহুম শাহ বখত ছিলেন একজন পাবলিক সার্ভেন্ট।
ডা. সালেহা খাতুনের কর্মজীবনের একটি বড় অংশ কেটেছে চট্টগ্রাম সরকারি মেডিকেল হাসপাতাল, সুনামগঞ্জ ম্যাটার্নিটি সেন্টার সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য দপ্তরে। তবে কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য অংশ অতিবাহিত হয়েছে সিলেটের মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল কমপ্লেক্সে (রেডক্রিসেন্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র)।
স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারী চিকিৎসকের স্বল্পতা-যুগে সিলেট শহরে তিন-চারজন ‘লেডি ডাক্তার’ই ছিলেন সিলেট অঞ্চলের বিশেষত সন্তানসম্ভবা মা ও নারী রোগীদের স্বস্তি ও নির্ভরতার স্থান।
সন্তানদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেও দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যেই যাপিত ছিলো জীবনের অন্তিম বছরগুলো। ২০১৫ থেকে দেশেই (সিলেটের কুমারপাড়াস্থ বাসভবনে) কাটিয়েছেন ধর্মকর্মে, একান্তে, অন্তরালবাসিনী হয়ে।
ডা. সালেহার স্বামী এ কে সামস ছিলেন স্বাধীনতাপূর্ব ষাটের দশকে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল। ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিবিসিআই, ইউকে) চিফ অ্যাডভাইজার ও ফরমার চেয়ারপার্সন শাহগীর বখতের বড় বোন। সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত মরহুমার চাচাতো ভাই।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন