মৌলভীবাজারে নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী চা-কন্যা গীতা কানু

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি\ মৌলভীবাজারের একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী চা-কন্যা গীতা কানু। কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্দিতা করছেন। জেলার সাত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র নারী প্রার্থী গীতা রানী কানু (৪৩)। তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। কমলগঞ্জ উপজেলার চা-বাগান কুরমাতে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। দারিদ্র্যসহ নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন পিছিয়ে থাকা চা জনগোষ্ঠীর এই নারী। গীতা রানী কানু বসবাস করেন কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের ইসলামপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী চা-বাগান কুরমাতে। গত (২৪মে)বৃহস্পতিবার সকালে তাকে দেখা গেল কাকা সীতারাম কানু, কাকি শংকরী রায় কানুসহ আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে। আলাপে গীতা জানালেন, জনগণ চাঁদা তুলে আমাকে নির্বাচন করার জন্য জামানতের টাকা দিয়েছেন। গীতা বলেন,কমলগঞ্জে ২২টি চা-বাগান। এই চা-বাগানসহ চা জনগোষ্ঠীর নানা অধিকারের কথা তিনি অনেক দিন ধরে বলছেন। চা জনগোষ্ঠীর দাবি দাওয়া আদায়, তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে নানা পর্যায়ের সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার এই ইচ্ছার পেছনেও আছে হতদরিদ্র, পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোর জীবনের উন্নয়ন চাওয়া। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার মতো সাহস অর্জন করতে অনেকটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে গীতা রানী কানুকে। বাড়ির কাছে ইসলামপুর পিএনপি হাইস্কুলে তিনি পড়ালেখা করেছেন। বাবার মুদি দোকান ছিল, পাশাপাশি ছিলেন চা-বাগানের শ্রমিক। মা ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। স্কুল পর্যায় শেষে তিনি মুদি দোকানের ব্যবসায় যুক্ত হন। গীতা বলেন, দোকানে অভাবী মানুষ আসেন। তাদের সাধ্য মতো সাহায্য করি। মানুষকে সাহায্য করতে আমি পছন্দ করি। ত্যাগেই আমার আনন্দ। মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকে গীতা রানী কানু ২০১৪ সালে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। তখন জয়ী হতে পারেন নি। পরিবারের লোকজন তার পাশে থাকেন নি। একপর্যায়ে কিছুটা অভিমান নিয়ে তিনি ২০১৬ সালে ভারতে চলে যান। তবে দুই মাস পর তিনি সেখানে থেকে ফিরে আসেন। মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ বোধ করেন। এখন তিনি বাংলাদেশ চা-শ্রমিক নারী ফোরামের আহ্ধসঢ়;বায়ক, চা জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন পরিষদের সদস্য সচিব এবং চা-শ্রমিক মহা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক। কাকা সীতারাম কানু বলেন, মানুষ বেশ সাড়া দিচ্ছে। কাকি শংকরী রায় কানু বলেন, প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াইছে, এতেই ভালো লাগছে। এখন সবকিছু মানুষের হাতে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন