ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আজ মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আগে থেকেই বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল ক্ষমতাসীন বিজেপি। বুথফেরত জরিপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই ফল ঘোষণার আগেই বিজয় উদযাপনের পরিকল্পনা করে রেখেছে দলটি।
এরই অংশ হিসেবে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে বিজেপি, যা চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ হতে পারে। অন্যদিকে বিরোধী জোট আগেই হার না মেনে রণকৌশল শানানোর পরিকল্পনা করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতি ভবনে আসন্ন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় গণপূর্ত দপ্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এ ছাড়া নয়াদিল্লিতে নবনির্বাচিত এমপিদের আগমন ও থাকার ব্যবস্থা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে লোকসভা সচিবালয়। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও অন্য মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি ভবনে সৌন্দর্যবর্ধন কাজের দরপত্রও এরই মধ্যে আহ্বান করেছে রাষ্ট্রপতির সচিবালয়। গতকাল সোমবার দরপত্রের বাক্স খোলার কথা ছিল। সাজসজ্জার উপকরণ সরবরাহের জন্য পাঁচ দিন সময় পাবেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
সূত্র আরো বলছে, নতুন সরকারের আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণের দিনই নয়াদিল্লির ‘ভারত মণ্ডপম’ বা কর্তব্যপথ ভবনে বিজেপির রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হতে পারে। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিসহ ৮ থেকে ১০ হাজার অতিথি উপস্থিত থাকতে পারেন।
এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এটি আগামী ৯ জুন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
বিজেপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিশেষ করে বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ‘একটি বড় সমাবেশ’ আয়োজনের প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতারা আলাপ করেছেন। রামলালা ময়দান, রেড ফোর্ট, ভারত মণ্ডপম ও যশোভূমি কনভেনশন সেন্টারের যেকোনো একটিতে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতে পারে।
বুথফেরত জরিপে আস্থা নেই বিরোধীদের
গত শনিবার শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে বুথফেরত জরিপে বিজেপির বড় ব্যবধানের জয়ের আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে এসব জরিপে আস্থা নেই বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার নেতাদের।
কংগ্রেসের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, ‘আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে। আমরা আশাবাদী, আমাদের ফলাফল বুথফেরত জরিপের সম্পূর্ণ বিপরীত হবে।’
কংগ্রেসের আরেক নেতা শশী থারুর বুথফেরত জরিপকে হাস্যকর আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘বুথফেরত জরিপের আভাস অনুযায়ী কেরালায় বিজেপির সাতটি আসন জেতা সম্ভব নয়। ইন্ডিয়া জোট ২৯৫টি আসন পেতে যাচ্ছে।’
এদিকে আম আদমি পার্টির নেতা সোমনাথ ভারতীও বুথফেরত জরিপ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি আবারও প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি ন্যাড়া হয়ে যাবেন। ভোট গণনার পর ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন করবে বলে তিনি আশাবাদী। ভারতী বলেন, দিল্লির সাতটি আসন ইন্ডিয়া জোটই পাবে। মোদির ভয়ে বুথফেরত জরিপে তাঁকে পরাজিত দেখানো হয়নি।
ফলাফলের পর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর জোটের নেতাদের নিয়ে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করার ঘোষণা দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেস। এ জন্য আজ রাত অথবা আগামীকাল সকালের মধ্যে নেতাদের নয়াদিল্লিতে আসতে বলা হয়েছে।
কংগ্রেসের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছে, যদি প্রত্যাশিত ফলাফল না আসে তাহলে আন্দোলন, সংবাদ সম্মেলন অথবা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার মতো বিকল্প পন্থা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন