আসন্ন ঈদের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে নতুন গতি আনবে বলে আশা করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় এক গোলটেবিল আলোচনায় তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন সারা বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত। আর এই সম্পর্কের সৌন্দর্য হচ্ছে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ধারাবাহিকতা।
‘বাংলাদেশ ও ভারতে নতুন সরকার : সম্পর্কের আরো বিকাশের জন্য একটি নতুন সূচনা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য মো. শাহরিয়ার আলম।
ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ, সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান, প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, ভারতের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক দেবদীপ পুরোহিত, কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিকাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারণে কোনো চ্যালেঞ্জই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। দুই দেশের মধ্যে প্রতিবেশী হিসেবে সম্পর্ক এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তা পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
দুই দেশের এই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশ্বে দৃষ্টান্ত। এই সম্পর্ক আরো নতুন উচ্চতায় এগিয়ে যাবে। শাহরিয়ার আলম বলেন, গত ১৫ বছরে চ্যালেঞ্জ কাটাতে কূটনীতির বাইরে গিয়েও অনেক কাজ করা হয়েছে। সেই কারণে ২০২৪ সালে মানুষের মাঝে প্রত্যাশার মাত্রা বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটা অর্জন করে দেখিয়েছেন। শাহরিয়ার আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে নির্ধারিত দ্বিপক্ষীয় সফরে যাবেন। এ সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এখন ন্যায্য হিস্যা আদায় করাটাই কাজ। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করা গেছে।
বাকিগুলোও করা যাবে। সব মিলিয়ে মানুষের একটি প্রত্যাশা আছে, শেখ হাসিনার কারণে এটি তৈরি হয়েছে। এ প্রত্যাশা বাস্তবায়নে কাজ করতে গেলে খারাপ প্রচারণাও থাকবে। এগুলো পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ১৯৭১ সালে রক্ত ভাগ করতে পারি, আমি বিশ্বাস করি আমরা জলও ভাগ করতে পারব।’ ইমতিয়াজ আহমেদ জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে ভূ-রাজনৈতিক সহযোগিতায় রূপান্তর করা সম্ভব। কারণ বাণিজ্যসহ অনেক ক্ষেত্রেই চীনের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে।
মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেন, তিস্তায় পর্যাপ্ত পানি না-ও থাকতে পারে। তবে ব্যবহারের জন্য যা পাওয়া যায়, তা ভাগ করে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক শাহাব এনাম খান ভারতীয় ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্রুততর করার ওপর জোর দেন।
গৌতম লাহিড়ী বলেন, দুই দেশ বহু বছর পর স্থলসীমানা সমস্যা সমাধান করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কোনো একসময়ে তিস্তা নিয়ে সমাধান হবে। দেবদীপ পুরোহিত সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন