রাত পোহালেই কোপার দামামা

বছরখানেক আগেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন লিওনেল মেসি। মার্কিন মুলুকে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির পা পড়ায় সেখানকার ফুটবলের খোঁজখবর এখন রাখেন এমন ফুটবলপ্রেমীর সংখ্যাও বেড়েছে হু হু করে। সেই অঞ্চলেই শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হচ্ছে লাতিন ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর কোপা আমেরিকার ৪৮তম আসর। মুকুট ধরে রাখার মিশনে উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

আটলান্টার মার্সিডিস বেঞ্জ স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ কানাডা। এবারই প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোনো প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে আলবিসেলেস্তারা।

 

দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল) এবং উত্তর আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশনের (কনকাকাফ) যৌথ উদ্যোগে এবার মাঠে গড়াচ্ছে প্রাচীন এই আসরটি। অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা এবার বেড়ে হয়েছে ১৬।

কনমেবলের ১০টি এবং অতিথি হিসেবে কনকাকাফের ছয়টি দেশ অংশ নিচ্ছে। দলের সংখ্যা বাড়ায় এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বাড়বে বলে আশা আয়োজকদের।

 

শিরোপাধারী আর্জেন্টিনা যে ফেভারিট হয়েই মাঠে নামছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দারুণ ছন্দে থেকেই আসর শুরু করছে চ্যাম্পিয়নরা।

কাতার বিশ্বকাপে সৌদি আরবের কাছে হারের পর খেলা ১৮ ম্যাচের মাত্র একটি জিততে পারেনি লিওনেল স্কালোনির দল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে হেরেছে শুধু উরুগুয়ের কাছে। এ মাসেই খেলা দুটি প্রীতি ম্যাচ যেভাবে জিতেছে, তাতে আর্জেন্টিনার শিরোপা ধরে রাখার আশার পালে দোলা দিতেই পারে। আর সেই আশা-প্রত্যাশা পূরণে বড় কারিগর হতে পারেন লিওনেল মেসি। ক্লাব ফুটবলে চোটের কারণে নিয়মিত খেলতে না পারলেও আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৩৬ বছর বয়সী এই ফুটবলার নিজেকে নিংড়ে দিতে প্রস্তুত।

দলটির কোচ স্কালোনি যেমন বলেছেন, ‘মেসি এখন পুরো ফিট। যুক্তরাষ্ট্রে জাদু দেখাতে প্রস্তুত। ওকে দেখে গোটা দল উৎসাহ ও প্রেরণা পেয়েছে। প্রত্যেকে নিজের সেরা ফুটবল খেলতে তৈরি।’ মেসিও বলছেন শিরোপা জেতা সহজ হবে না, ‘আজ আমরা বলতে পারি—আমরাই সেরা; কারণ আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কিন্তু এটা আমাদের এই বিশ্বাস দেয় না যে আমরা হেঁটে হেঁটে কোপা আমেরিকা জিতে যাব।’ কানাডা ছাড়াও গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ‘পুরনো শত্রু’ চিলি ও পেরু। এই গ্রুপ থেকে আর্জেন্টিনার সঙ্গে পরের রাউন্ডের জন্য চিলিকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই এই চিলির কাছে ফাইনাল হেরে কোপা আমেরিকা জেতা হয়নি আর্জেন্টিনার। এবার গ্রুপ পর্বেই তাদের পাচ্ছেন মেসিরা।

 

অন্যদিকে আরেক লাতিন জায়ান্ট ব্রাজিলকে চাপে থেকেই আসর শুরু করতে হচ্ছে। কয়েক দিন আগেই সেলেসাওদের সাবেক তারকা রোনালদিনহো ব্রাজিলের এই দল নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। তাঁর দেখা, এই দলই নাকি সবচেয়ে বাজে। সাবেক ফুটবলারের সমালোচনায় চাপ আরো বেড়ে গেছে, তা বলাই যায়। নতুন কোচ দরিভাল জুনিয়রের অধীনে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সাম্প্রতিক নৈপুণ্য তাদের হয়ে কথা বলছে না। সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচেও যুক্তরাষ্ট্রকে হারাতে পারেনি। তবে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, রাফিনিয়াদের সঙ্গে এনদ্রিকের সংযোজন আশা দিচ্ছে সেলেসাওদের। কিন্তু গ্রুপ পর্বে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে ব্রাজিলকে। কলম্বিয়া ছাড়াও এই গ্রুপে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ কোস্টারিকা ও প্যারাগুয়ে। ২০২২ সাল থেকে কোনো ম্যাচ হারেনি কলম্বিয়া। নেস্তোর লরেঞ্জোর অধীনে অপরাজিত আছে ২৩ ম্যাচ। বিশ্বকাপ বাছাইয়েও ব্রাজিলকে হারানোর সুখস্মৃতি আছে কলম্বিয়ানদের।

রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকেও শিরোপার রেসে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও তরুণ দল নিয়ে লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছে তারা। এ ছাড়া স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রও প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হতে পারে। ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে চাইবে তারাও। ১৪টি স্টেডিয়ামে ১৬ দলের লড়াই শেষে মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কারা শিরোপা উৎসবে মাতোয়ারা হবে, তা জানা যাবে ১৫ জুলাই মহা ফাইনালের পর।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন