সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ২৯২ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পর ৯১ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়েও জিততে পারেনি আফগানিস্তান। ম্যাক্সওয়েলের অতিমানবীয় ইনিংসের কাছে হেরেছিলো আফগানরা। তার অবিশ্বাস্য ইনিংসে ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতে যায়। পায়ের সমস্যা নিয়ে ব্যাট করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল।
ব্যথায় কাতরানো ম্যাক্সওয়েলকে রুখতেও সেদিন ব্যর্থ হয়েছিল আফগান বোলাররা। একাই করেছিলেন অপরাজিত ২০১ রান। চার ছক্কার ফুলঝুরিতে ১২৮ বলে সাজিয়েছিলেন তার ইনিংসটি। সেদিন আফগানিস্তান দলে ছিলেন না গুলবদিন।
তবে হয়তো সেদিন খেলা দেখে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, অস্ট্রেলিয়াকে বদ করবেন একদিন-হবেন জয়ের নায়ক।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়েছে আফগানরা। আফগানিস্তানের বোলারদের দাপটে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ১২৭ রানে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি আফগানিস্তানের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়।
অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দিয়েছেন মূলত গুলবদিনই। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। আউট করেছেন সেদিনের নায়ক ম্যাক্সওয়েলকে। ফিরিয়েছেন মার্কাস স্টয়নিস, টিম ডেভিডের মতো সেরা ব্যাটারদের।
সাজঘরের পথ ধরিয়েছিলেন তার উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করা প্যাট কামিন্সকেও। মূলত গুলবদিনই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন।
কে জানত, সেই ছেলেটার হাত ধরেই একদিন অস্ট্রেলিয়া–বধের গল্প লিখবে আফগানরা, গড়বে ইতিহাস! যার শৈশব কেটেছে পাকিস্তানের শরণার্থীশিবিরে। প্রতিনিয়ত লড়াই করেছেন। পড়ে গেছেন, আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে যার অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা শুরু করেছিলেন মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খানরা। অধিনায়ক হয়ে সেই রশিদ খান অষ্টম বোলার হিসেবে বল তুলে দিলেন গুলবাদিনের হাতে। দিলেন সেনাপতির আস্থার প্রতিদান। দক্ষ সৈনিকের মতো কুপোকাত করলেন শত্রুশিবির। গড়লেন ইতিহাসও।
এমন জয়ের পর গুলবদিন স্মরণ করেছেন প্রিয় দেশ আফগানিস্তানের কথা। যে দেশটি ছাড়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও মাটি কামড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। গুলবদিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এইভাবে, ‘প্রিয় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা। এই মুহূর্তটির জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আমার জন্য এটি দারুণ মুহূর্ত। শুধু আমার জন্য নয়, গোটা জাতির জন্য, আমাদের মানুষের জন্য অনেক বড় মুহূর্ত এটি। দেশের জন্য, আফগান ক্রিকেটের জন্য বড় অর্জন। কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না আমি। তবে সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যারা সব সময় পাশে থেকেছে। রশিদকে ধন্যবাদ, আমার প্রতি ভরসা রাখার জন্য।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন