ভারতে কলকাতা-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসে পরিত্যাক্ত একটি ব্যাগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার (২৮ জুন) সাড়ে ৪টার দিকে কলকাতার চিতপুর রেল স্টেশনে পৌঁছানোর কথা ছিল ট্রেনটির। কিন্তু তার আগেই সেটিকে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে থামিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় আধা ঘণ্টার উপরে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে এরপর যাত্রীরা নেমে এসে খোঁজখবর করতেই জানা যায়, স্লিপার কোচের (এস-৮) ভিতর একটি পরিত্যক্ত লাল ব্যাগকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়ায়।
মুহূর্তের মধ্যেই রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওই কামরাটি খালি করে দেওয়া হয়। এরপর তল্লাশি কুকুর এনে অভিযান শুরু করে বোম্ব স্কোয়াডের লোকজন। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের (আরপিএফ) এর শীর্ষ কর্মকর্তারাও।
এরপর সন্দেহজনক ওই ব্যগটিকে ট্রেনের কামরা থেকে বাইরে বের করে নেওয়া হয়। সেটি প্ল্যাটফর্মে রেখে তাতে তল্লাশি চালান বোম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা। কিন্তু সেটির ভেতর থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ট্রেনটি কলকাতা স্টেশনের দিকে রওয়ানা দেয়।
সাধারণত কাশ্মির ভ্রমণের জন্য কলকাতাবাসীর কাছে একটি আদর্শ ট্রেন হলো কলকাতা-জম্মু তাওয়াই। বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ট্রেন।
বাংলাদেশের খুলনা থেকে এই ট্রেনে চেপেই কাশ্মির ভ্রমণ করে কলকাতায় ফিরছিলেন খুলনার বাসিন্দা জানে আলম আক্তার ও জনিসহ তিন বন্ধু। বোমার খবর পেয়ে তারা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জানান, দীর্ঘক্ষণ ট্রেন না ছাড়ার কারণে কিছুটা ধৈর্য হারিয়ে প্ল্যাটফর্মে নেমে আসেন। তারপরেই বোমার বিষয়টি জানতে পারেন।
তাদের বক্তব্য, বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আরও আগে জানানো উচিত ছিল। কারণ এর সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি জড়িয়ে রয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর অবশেষে ট্যাক্সি করে তারা কলকাতার নিউমার্কেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। শনিবার (২৯ জুন) তারা ঢাকার উদ্দেশ্য রওয়ানা দেবেন।
খুনলার বাসিন্দা জানে আলম আক্তার বলেন, বুধবার (২৬) জুন রাতে কাশ্মির থেকে ট্রেনে উঠি। দক্ষিণেশ্বর ষ্টেশনে প্রায় তিন ঘন্টা ট্রেনে বসে ছিলাম। যাওয়ার কথা ছিল কলকাতা ষ্টেশনে। এখন শুনতে পারছি এস-৮ স্লিপার ক্লাসে বোমা আছে। শুনলাম, পুলিশ কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। এতক্ষণ বসে থাকার চেয়ে মেট্রোরেল অথবা ট্যাক্সিতে করে নিউমার্কেট চলে যাবো।
জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসের গার্ড তাপস কুমার কুণ্ডু জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ট্রেনটি কাশ্মির থেকে ছেড়ে আসে। শিয়ালদহ ঢোকার আগেই আমাকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রেনের ওই নির্দিষ্ট কামরায় লাল ব্যাগ রয়েছে ও তাতে সন্দেহজনক কিছু বস্তু রয়েছে। ব্যাগটির ভেতর থেকে টিকটিক আওয়াজও আসছে। এসব তথ্য শোনার পর ট্রেনটিকে আর সামনের দিকে যেতে দেওয়া হয়নি। এরপর ট্রেনটি দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে।
পাপাই দেবনাথ নামে এস- ৮ কোচের এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ করেই আমার কানে টিকটিক আওয়াজ আসে। এরপরে মাথার উপরের বার্থে লাল-কালো রঙের ব্যাগ। সেটি অনেকটা স্কুল ব্যাগের মত। পরে আমি রেল ওয়ের হেল্পলাইন ১৯৩ নম্বরে কল দিই। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি রেলের গার্ড, চালকসহ সবাইকে জানানো হয়। পরে দক্ষিণেশ্বর রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন