হাকিকুল ইসলাম খোকন ,,
জীবিত থাকাকালে মানুষ তার অবদানের জন্য খুব একটা প্রশংসিত হয় না ৷ আবার মৃত্যুর পর শ্রদ্ধার অঞ্জলীও খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না ৷ তাই আমাদের প্রশংসা এবং ইতিবাচক অভিমত একজন জীবিত ব্যক্তিকে ঘিরে ৷ তার ব্যতিক্রমধর্মী সাফল্য এবং গৌরবময় কিছু কীর্তিকলাপ নিয়ে এই বর্ণনা ৷
খালেক চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সনে ৷ ৫২ সালে সেন্ট গ্রেগরী থেকে মেট্রিক ও ৫৪ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন ৷ তিনি ১৯৫৮ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন ৷ ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন ৷ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়মিত খেলেছেন ৷ এসএম হলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ৷ ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দলের সদস্য হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে খেলতে যান ৷ ১৯৫৯ সালে তিনি ইষ্ট পাকিস্তান ফুটবল টিমের নেতৃত্ব দেন ৷ এশিয়ান গেমসে খেলার জন্যে পাকিস্তান টিমে মনোনীত হলেও ইনজুরীর জন্যে খেলতে পারেননি ৷ তিনি ১৯৭৭-১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সেক্রেটারী নির্বাচিত হন ৷ কর্মজীবনে অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন ৷বাপসনিউজকে জানিয়েছেন সাংবাদিক মোঃনাসির ।
ঢাকার মাঠে যখন মারী, আশরাফ, মিন্টু, গজনভী, মোবাশ্বার, গফুর বালুচরা দুর্দণ্ড প্রতাপে মাঠ কাঁপাতেন তখন খালেক চৌধুরীও ঢাকার ফুটবল মাঠে সপ্রতিভ ৷ একই সাথে একাধিক খেলায় কৃতিত্ব ব্যতিক্রমধর্মী ৷ আমরা সালাহউদ্দিন ও রামার মাঝে এরূপ প্রতিভা দেখেছি ৷ খেলা-ধূলার কারণে একাডেমিক অগ্রগতিতে বিঘ্ন ঘটা স্বত্ত্বেও খেলাধূলায় সম্পৃক্ত থাকা এক বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের পরিচয় মিলে ৷ তদুপরি বাড়ীর ও পরিবারের কড়াকড়ি, নিয়ম-কানুন অতিক্রম করে খেলা-ধূলায় মেতে থাকা অত্যন্ত কঠিন ৷ নেহাল হাসনাইন চৌধুরীর ভাষ্যমতে যখনই চাচার সাথে মেলা-মেশা করেছি তখনই চাচার খেলোয়াড়ীসুলভ মনোবৃত্তির পরিচয় পেয়েছি ৷ বড়ো মন, অন্যের আনন্দে আনন্দিত হওয়া, হার-জিত মেনে বিজয়কে ভাগ করে নেয়া, সতীর্থ খেলোয়াড়দের প্রতি একটি বিশেষ আকর্ষণ অনুভব করা ইত্যাদি চাচার মাঝে দেখেছি ৷ বিশেষ করে চাচার কাছে কাজে গেলে কোন কারনে বিরক্ত হতেন না ।তিনি অধৈর্য্য না হয়ে সৃজনশীলতা আর প্রানস্পর্শী উদ্দামতাকে আরো উদ্বুদ্ধ করতেন ৷ সেসব ১৯৭৮ এর কথা ৷ আমার স্মৃতিতে এগুলি আজো ভাস্মর ৷ যেনো তার ব্রতই ছিলো, শতফুল ফুটতে দাও ৷ পরলোকগত খালেক চৌধুরী জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন খেলোয়াড়এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন নেহাল হাসনাইন চৌধুরীর চাচা ছিলেন ।নেহাল হাসনাইন চৌধুরী বাংলাদেশ ক্রিকেটের জাতীয় দলের প্রাক্তন খেলোয়াড় মোহামেডানের এবং সূর্য তরুণের ও আবহানীর হয়ে খেলেছেন ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন