ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ব্যাপক হামলায় নিহত বেড়ে ৪১

রাশিয়া সোমবার ইউক্রেনের শহরগুলোতে ৪০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেনজুড়ে চালানো এই হামলার সময় রাজধানী কিয়েভের প্রধান শিশু হাসপাতালেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের ঘটনা ঘটে। গত কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার এটিই সবচেয়ে মারাত্মক হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে মারাত্মক এ হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ জনে।

 

সোমবার প্রকাশ্য দিবালোকে কিয়েভের প্রধান শিশু হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার পর বাবা-মা তাদের শিশুদের জড়িয়ে ধরে হাসপাতালের বাইরে চলে যান। তারা রাস্তায় হাঁটছিলেন এবং হতবাক হয়ে কাঁদছিলেন। হামলায় হাসপাতালের জানালাগুলো ভেঙে যায়। ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

কিয়েভে শত শত বাসিন্দা এখন ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে সাহায্য করছে।

 

এএফপি সাংবাদিকরা জানান, তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন এবং মধ্য কিয়েভ থেকে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা দেখা গেছে। এ ছাড়া কিয়েভের শিশু হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বিতরণ করা ছবিগুলোতে দেখা যায়, মানুষ ধ্বংসস্তূপের মাঝে খনন করছে, ভেঙে পরা ভবন থেকে কালো ধোঁয়া উঠছে। এ ছাড়া রক্তমাখা পোশাক পরা চিকিৎসাকর্মীদেরও সেখানে দেখা যায়।

 

হামলার পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘রুশ সন্ত্রাসীরা’ আবারও বিভিন্ন শহর—কিয়েভ, দিনিপ্রো, ক্রিভি রিগ, স্লোভিয়ানস্ক, ক্রামতোর্স্কে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছে।

৩৩ বছর বয়সী স্বিতলানা ক্রাভচেঙ্কো রয়টার্সকে বলেন, ‘ভীতিকর এক পরিস্থিতি ছিল। আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না, আমি আমার সন্তানকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম, যাতে শ্বাস নিতে পারে।’

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ওয়াশিংটনে যাওয়ার আগে পোল্যান্ডে যাত্রাবিরতি করেন। সেখানে তিনি বলেন, রাশিয়ার এই হামলায় তিন শিশুসহ ৩৭ জন নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে আহত হয়েছেন আরও ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ। তবে রয়টার্ষের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৪১ জন। 

 

বিমান প্রতিরক্ষা ৩৮টির মধ্যে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে বলে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে। তবে কিয়েভের সামরিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীতে তিন শিশুসহ ২৭ জন মারা গেছে এবং দুই ঘণ্টা পরের হামলায় ৮২ জন আহত হয়েছে।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে লেখা এক বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, হামলায় শিশুদের হাসপাতাল, কিয়েভের একটি মাতৃত্ব কেন্দ্র, শিশুদের নার্সারি এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্র ও বাড়িসহ ১০০ টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রুশ সন্ত্রাসীদের অবশ্যই এর জবাব দিতে হবে। কেবল উদ্বিগ্ন হলেই সন্ত্রাস বন্ধ হয় না। সমবেদনা কোনো অস্ত্র নয়।’

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর ক্রিভি রিহ, ডিনিপ্রো এবং দুটি পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধে সবচেয়ে মারাত্মক এ হামলার কারণে আজ মঙ্গলবার ১ দিনের শোক দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। সরকার বলেছে, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে জরুরিভাবে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষার আপগ্রেড প্রয়োজন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন