সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্যামাপূজা সারা দেশে পালিত হলো । করোনা মহামারির দুর্যোগ মাথায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার এ পূজা শেষ হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রী বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী আনুষ্ঠানিক ভাবে শ্যামাপূজার উদ্বোধন করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট কিশোর রঞ্জন মণ্ডল জিবিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্যামাপূজা ভক্তদের পালন করার জন্য।“
তিনি বলেন, “মায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা, সারা পৃথিবী থেকে করোনাভাইরাস দূর হয়ে যাক, সকলে সুস্থ থাকুক, বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক। দীপাবলী- আলোর উৎসব। অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক শুভ দীপাবলী। অন্ধকারকে দূর করে শুভ ও কল্যাণের প্রতিষ্ঠায় এ উৎসব উদযাপন করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার আয়োজন কিছুটা কম। তবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রতিবারের মতোই শ্যামাপূজা সাত্ত্বিকভাবে মায়ের আরাধনার সকল আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে ।”
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পুজা বা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালি নামের উৎপত্তি। কালী পূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুন্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ অনেক নামে পরিচিত।
হিন্দু পূরাণ মতে, কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মন্ডপে মৃন্মময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয। মধ্যরাতে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কালী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে শ্মশানে মহাধুমধামসহ শ্মশানকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ দিনে মঙ্গলময়ী, শক্তিরূপিণী শ্যামা মায়ের পূজার্চনা করে থাকেন। একই সঙ্গে দীপাবলি উৎসবও । ঘরে ঘরে প্রদীপ জ্বেলে আয়োজন করা হয় দীপাবলি উৎসবের।
প্রাচীন প্রথা অনুসারে দীপাবলির সন্ধ্যায় তেল দিয়ে সহস্র মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়। তবে বর্তমানে শহরাঞ্চলে অনেকে তেলের প্রদীপের পরিবর্তে মোমবাতি ব্যবহার করেন।
এছাড়াও রমনা মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, সবুজবাগ থানাধীন শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, পুরান ঢাকার রাধাগোবিন্দ জিঁও ঠাকুর মন্দির, পোস্তগোলা মহাশ্মশান, তাঁতী বাজার, শাখারী বাজার, বাংলা বাজারসহ বিভিন্ন মন্ডপ ও মন্দিরে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্যামা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন