আরও ৭০ হাজার মার্কিনির মৃত্যুর আশঙ্কা বাইডেন-কমলার শপথের আগে

মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা প্রতিনিধি:জানুয়ারিতে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে আরও ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। এদের মধ্যে প্রাণ হারাতে পারে ৭০ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ বর্তমান মৃত্যু হার বিবেচনায় নিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন আভাস দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যদি তাদের কৌশল পরিবর্তন করে এবং অঙ্গরাজ্যগুলোর সরকার যদি কঠোর ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়, তখনই কেবল এমন পরিস্থিতি ঠেকানো সম্ভব।          যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম দফার প্রকোপ ছড়িয়েছিল বসন্তকালে। তখন বড় বড় উপকূলীয় শহরগুলো বেশি আক্রান্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার করোনা প্রকোপ ছড়ায় গ্রামীণ এলাকাগুলোতে। তৃতীয় দফার প্রকোপ ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ এলাকাতে। এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়েছে। শুধু বুধবারেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহরগুলোতে নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়া ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেবেন ২০ জানুয়ারি। এরইমধ্যে তিনি অঙ্গীকার করেছেন, ক্ষমতাগ্রহণের পর করোনাভাইরাস মোকাবিলাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মাস্ক পরিধানের ওপর জোর দেওয়া এবং বিভিন্ন ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আরও বেশি প্রণোদনা দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তবে তার শপথগ্রহণের আরও দুই মাস বাকি। আর তার আগে যুক্তরাষ্ট্রে করোনার প্রকোপ ৮০ শতাংশ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে রয়টার্স। মৃতের সংখ্যা ২৯ শতাংশ বেড়ে যাওয়ারও আভাস দিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। তারা আশঙ্কা করছে এ দুই মাসে আরও ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ মানুষ মৃত্যু বরণ করতে পারে।

 

দ্য ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন (আইএইচএমই)ও একই রকমের আভাস দিয়েছে। তারা বলেছে বর্তমান সরকারের কৌশলে পরিবর্তন আনা না হলে নভেম্বর ১২ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অতিরিক্ত ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষের প্রাণহানি হতে পারে।

 

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি মোকাবিলা অনেক বেশি কঠিন হয়ে উঠবে। পরিস্থিতি ঠেকাতে এখনই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারকে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারিবিষয়ক অধ্যাপক গ্রেগ গনসালভেস বলেন, ‘করোনা মহামারি বসন্তে যেমন ছিল, সামনে তা আরও খারাপ হতে পারে। আমেরিকানদের জন্যও তা আগের চেয়ে খারাপ হবে।’

 

গনসালভেস আরও বলেন, ‘কাজ বন্ধ রেখে জনগণকে বাড়িতে রাখার জন্য তাদেরকে যে যে সহায়তা দেওয়া দরকার, তা নিরূপণের চেষ্টা করছি আমরা। বাড়িতে রাখতে গেলে তাদেরকে বেতন দেওয়া যেতে পারে। সবার বাড়িতে বাড়িতে আমরা মাস্ক পাঠাতে পারি।’

 

নির্বাচনি প্রচার ও ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভোট চ্যালেঞ্জ করতে গিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সকে খুব কম সময় দিয়েছেন তিনি। তাছাড়া, বাইডেন ক্ষমতা নেওয়ার আগ পর্যন্ত কংগ্রেসে উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব পাসের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিভিন্ন আঞ্চলিক টাস্ক ফোর্সের একটি জোট ট্রাম্পের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সকে বর্জন করেছে।

 

অক্সফোর্ড ইকোনমিকস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ গ্রেগ ডাকো বলেন, এটি সম্ভবত খুব একটা কার্যকর সমাধান নয়, তবে একেবারে কিছু না হওয়ার চেয়ে ভালো।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন