মৌলভীবাজারে মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাইলেন বাবা-মা

  জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

৩৭ দিনের শিশু ও ৫ বছরের এক ছেলে রেখে যাওয়া ফারহানা আক্তারকে যৌতুকের কারণে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে স্বামী রুমেল আহমদ ও তার পরিবারের লোকেরা। এ অভিযোগ করে মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন অসহায় এক বাবা।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর (লামুয়া) গ্রামের মৃত আজব উদ্দিনের পুত্র সঞ্জব আলী ১৫ নভেম্বর দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

সঞ্জব আলী তার লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি কুয়েত ফেরত অসহায় এক পিতা। অনেক আশা ভরসা নিয়ে ফার্নিচারসহ অনেক মালামাল দিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তার মেয়ে ফারহানা আক্তারকে(২৫) মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গোমড়া গ্রামের হোসাইন আহমদের পুত্র রুমেল আহমদের কাছে গত ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ইং বিয়ে দেন। শুরুতে সুখে শান্তিতে তাদের দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত হলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবীতে স্বামী রুমেল আহমদ, শ্বশুর হোসাইন আহমদ, শ্বাশুরী জেসমিন বেগম, ননদ সীমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তিনি রুমেল আহমদকে ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং তারিখে রুমেল আহমদ ব্যবসা করার জন্য তার কাছে আরো ৭ লক্ষ টাকা দাবী করে। তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে ফারহানার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ফারহানা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকে এ বিষয়ে অবগত আছেন। খলিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজা মিয়ার বাড়ীতে একবার ও সাবেক সমাজকল্যান মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর বাড়ীতে সৈয়দ মোশতাক আলীর নেতৃতে দুইবার সালিশী বৈঠকে ঘটনার নিস্পত্তি হয় ও মেয়েকে শ্বশুর বাড়ীতে ফেরত পাঠানো হয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং রাতে ফারহানা মোবাইল ফোনে তার মাকে বলে স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে মারধর করছে। পরদিন তিনি মেয়ের শ্বশুর বাড়ী গেলে তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দেয়া হয়। মেয়ের সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি। ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে খবর দেয়া হয় মেয়ে মারা গেছে। তিনি আত্মীয়স্বজনসহ মেয়ের বাড়ীতে গেলে বসতঘরের সামনের কক্ষে মেয়ের লাশ দেখতে পান। মেয়ের এক কানে দুল আছে অপর কানে দুল নেই ও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। মেয়ের শ্বশুর হোসাইন আহমদ মামলা না করার জন্য তাকে হুমকি দেন।

তিনি ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং স্বামী রুমেল আহমদ, শ্বশুর হোসাইন আহমদ, শ্বাশুরী জেসমিন বেগম, ননদ সীমা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা ২ জনকে আসামী করে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় মডেল থানায় ১২/২১৫ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ স্বামী রুমেল আহমদ, শ্বশুর হোসাইন আহমদ, শ্বাশুরী জেসমিন বেগমকে গ্রেফতার করলেও অজ্ঞাত কারণে ননদ সীমা বেগমকে(২২) গ্রেফতার করেনি। গ্রেফতারকৃত রুমেল আহমদ এখনো জেল হাজতে আছে। ৩৭ দিনের শিশু ও ৫ বছরের এক ছেলে রেখে যাওয়া ফারহানা আক্তারকে যৌতুকের কারণে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে রুমেল আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। তারা অবৈধভাবে পোষ্টমর্টেমের রিপোর্ট তাদের অনুকুলে নেয়ার চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

সঞ্জব আলী মেয়ে ফারহানা আক্তার হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও মামলার অন্যতম আসামী ননদ সীমা বেগমকে গ্রেফতারের জোর দাবী জানান। মেয়ে হত্যার বিচার চাওয়ার কারণে তাকে মেয়ের শ্বশুর বাড়ীর পক্ষ থেকে প্রাননাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফারহানা আক্তারের মা রহিমা বেগম ও সালিশ বিচারে উপস্থিত সৈয়দ মুশতাক আলী তাদের বক্তব্যে ফারহানা আক্তার হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন