থাইল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে সর্বাধিক আসনে জয়লাভ করা ‘সংস্কারবাদী’ দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে দলটির তরুণ নেতা পিটা লিমজারোয়াটয়েনারটকে ১০ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দলটি নির্বাচনে জয় পেলেও সরকার গঠন করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
আদালতের রায়ে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির নেতাসহ আরো ১০ জন জ্যেষ্ঠ নেতাকে ১০ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধও করা হয়েছে।
দলটি নির্বাচনী প্রচারে থাইল্যান্ডের কঠোর রাজকীয় মানহানি আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাদের দেওয়া ওই সংস্কার প্রতিশ্রুতি অসাংবিধানিক বলে সাংবিধানিক আদালত জানুয়ারিতে এক রায় দেন। দলটির ভেঙে দেওয়ার রায় এক রকম অনুমিতই ছিল।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশন দলটির বিরুদ্ধে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিল। রায়ে আদালত বলেছেন, কঠোর লেসে-ম্যাজিস্টি আইন (থাই রাজতন্ত্রকে যেকোনো ধরনের সমালোচনা বা মানহানি থেকে সুরক্ষা আইন) পরিবর্তন করাটা সাংবিধানিক রাজতন্ত্রকে ধ্বংসের আহ্বান জানানোর শামিল।
তবে আদালতের এ রায়ের মাধ্যমেই থাই রাজনীতিতে সংস্কারবাদী আন্দোলনের অবসান ঘটাবে না। মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির ১৪২ জন এমপি অন্য নিবন্ধিত দলে স্থানান্তরিত হবেন এবং পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা অব্যাহত রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করা থাইল্যান্ডে নতুন ঘটনা নয়। ২০২০ সালেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। সে সময়ও নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত রকম ভালো ফল করা ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। সেই দলটিই পরে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টিতে রূপান্তরিত হয়।
চার বছর আগের দল ভেঙে দেওয়ার আদালতের রায়ের পর নতুন প্রজন্মের ছাত্র কর্মীদের নেতৃত্বে রাস্তায় বিশাল বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছিল, যা ছয় মাস ধরে চলে।
সে সময় রাজতন্ত্রকে আরো জবাবদিহির মুখে দাঁড় করানোর জন্য নজিরবিহীন দাবি ওঠে।
সে সময় থেকেই কর্তৃপক্ষ মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির এমপিসহ শত শত বিক্ষোভকারী ও নেতাদের বিচারের জন্য লেসে-ম্যাজিস্টি আইনের ব্যাপক ব্যাবহার করেছে।
বিবিসি তথ্য অনুসারে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা রুদ্ধ করার কারণে দেশটিতে আইনটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে এবং মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির ইশতেহারে এই আইনে সাজা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন