নবনিযুক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলামের নির্দেশের পরও দেশের বেশির ভাগ থানায় কাজে যোগ দেননি পুলিশ সদস্যরা। এতে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ঘটছে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনো পুলিশ সদস্য নেই।
কয়েকজন আনসার সদস্য থানা পাহারা দিচ্ছেন। থানার সামনের গেটও অর্ধেক বন্ধ রয়েছে। থানায় বসার জায়গাও নেই। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশে আরো অরাজকতা তৈরি হবে।
দ্রুত এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে দেশে অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার সদস্য। গত সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন।
ওই দিন বিকেলের পর থেকে দেশের বেশির ভাগ থানার পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটের পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতিতে চলে যান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ইউনিটের কর্মকর্তা ও ফোর্সকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত বেশির ভাগ থানায় পুলিশ যোগ দেননি।
অন্যদিকে গতকাল সেনা সদরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে নবনিযুক্ত পুলিশ প্রধান (আইজিপি), র্যাবের মহাপরিচালক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশের সব থানার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কাম্য বলে উল্লেখ করা হয়।
কালের কণ্ঠ’র চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ থানায় কাজে যোগ দেননি পুলিশ সদস্যরা। নিরাপদ কর্মপরিবেশসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দেননি বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে কাজে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।’
সদরঘাট থানায় দায়িত্ব পালন করা আনসারের এক সদস্য গতকাল বলেন, ‘সারা দিন পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের কেউ থানায় আসেননি। আমরাই থানার জিনিসপত্রের দায়িত্বে রয়েছি। আমাদের সহযোগিতা করেছে ছাত্ররা।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পশ্চিম বিভাগের এক এসআই কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা শুধু আদেশ পালন করি। এই আদেশ পালন করতে গিয়ে আমরা হামলার সম্মুখীন হয়েছি। হামলায় কতজন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন, সেটাও আমরা জানি না। নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা এখনো কাজে যোগদান করিনি।’
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন