হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী,,
হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী সিলেট থেকে: কুরআনের ১৮ নম্বর সূরা ‘সূরা কাহাফ’। এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়। এর আয়াত সংখ্যা ১১০। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, এ পুর্ণাঙ্গ সূরাটি এক সঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে ৭০ হাজার ফিরিস্তা দুনিয়াতে আগমন করেছেন। এ সূরার কিছু তথ্য আজ আমি হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো -নামকরণএ সূরায় আসহাবে কাহাফ তথা ওই সব মুমিন যুবক যারা দ্বীনকে সংরক্ষণের জন্য নিজেদের কোনো এক পাহাড়ের একটি গুহায় আত্মগোপনে রেখেছিলেন। তাদের ঘটনা বর্ণিত হওয়ায় এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে সূরা কাহাফ।এ সূরার তিনটি ঘটনা০১. ওই সব যুবকের ঘটনা, যারা ঈমান আকিদা রক্ষা করার জন্য নিজেদের ওপর কুরবানি করে নিজেদের আবাস ছেড়ে কোনো পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখানে ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে কাটানোর পর আল্লাহ তাআলা তাদের আবার জাগ্রত করেন।০২. হজরত মূসা ও খিজির আলাইহিস সালামের মাঝে সংঘটিত ঘটনা।০৩. বাদশাহ জুলকারনাইনের ঘটনা যিনি সারা বিশ্বের বাদশাহ ছিলেন এবং সারা পৃথিবী ভ্রমণ করেন। এ ঘটনাগুলোর জন্য উক্ত সূরাটি যেমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তেমনি অনেক ফজিলতপূর্ণ।ফজিলত হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, যে সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে সে দাজ্জালের ফিৎনা হতে নিরাপদ থাকবে। তাঁর থেকে আরেকটি রেওয়ায়েতে শেষ ১০ আয়াতের ব্যাপারে উল্লিখিত ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও মুসনাদে আহমদ) সুতরাং প্রথম বা শেষ ১০ আয়াত অথবা উভয় দিক দিয়ে মোট ২০ আয়াত যে মুখস্ত` করবে সেও উল্লিখিত ফজিলতের অন্তর্ভুক্ত হবে।হজরত সাহাল ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায়। আর যে পূর্ণ সূরা তিলাওয়াত করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ)জুমাআর দিন তিলাওয়াতের ফজিলত হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত নূর হবে।হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে, সে আট দিন পর্যন্ত সর্বপ্রকার ফেৎনা থেকে মুক্ত থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে সে দাজ্জালের ফিৎনা থেকেও মুক্ত থাকবে। অন্য রেওয়ায়েতে আছে এক জুমা থেকে অপর জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। তবে উল্লিখিত গুনাহ মাফ হওয়ার দ্বারা সগিরা গুনাহ উদ্দেশ্য। কারণ ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্য যে, কবিরা গুনাহ তওবাহ করা ছাড়া মাফ হয় না।পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সূরা কাহাফ বেশি বেশি করে তিলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন এবং এর মর্মার্থ বুঝে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও ফজিলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
লেখক : বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেট।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন