কমলগঞ্জ প্রতিনিধি ,,
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাটে ধলাই নদীর তীরে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানী লি: এর পোলট্রি খামারের বর্জ্যরে দুর্গন্ধে দীর্ঘদিন যাবত এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। দুর্গন্ধে টিকতে না পারায় অনেক পরিবারের শিশু ও মহিলাদের অন্যত্র বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। যাঁরা থাকছেন নাকে কাপড় বা রুমাল চেপে চলাচল করছেন।
খামারের দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ রোধে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে।
তবে কর্তৃপক্ষ দাবি করছে কিছুটা দুর্গন্ধ থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীর সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০১১ সাল থেকে সিপি বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্রয়লার ফার্ম (পোল্ট্রি খামার) স্থাপন করা হয়। ধলাই নদীর তীরে ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ৮ একর ভূমি নিয়ে বিশাল খামার স্থাপন করা হয়।
স্থানীয় জনসাধারণের ঘোর আপত্তি উপেক্ষা করে এই খামার স্থাপন করা হয়েছে। এতে পরিবেশগত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রহণ না করায় দিবারাত্রি খামারের প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। খামারের আশপাশ প্রতাপী, চৈত্রঘাট, জগনশালা, কান্দিগাঁও, জগন্নাথপুর, বড়চেগ, দক্ষিণগ্রাম, ছয়কুট, ল²ীপুর, বিষ্ণুপুর, শ্রীঘর, শ্রীনাথপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই খামার স্থাপনের ফলে এলাকার শিশু, বয়স্ক ও নারীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরণের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে এবং চরম স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
বড়চেগ গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশীদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতা তানজির শিশিরসহ স্থানীয়রা জানান, শুরু থেকে এলাকার লোকজন আপত্তি জানালেও তা আমলে নেয়া হয়নি। উপরন্ত প্রতিবাদকারীদের বিভিন্ন মামলা, হামলা দিয়ে হয়রানিও নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে এখন বাধ্য হয়ে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
বিক্ষোভও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতা তানজির শিশির, আব্দুল কাদের, সায়েল ইসলাম, ফাইম আহমদ, মিসবাহ আহমদ, নিজাম আহমদ, কমলগঞ্জ সংগ্রাম দলের সভাপতি আতাউর রহমান, ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য সামসুল আলম, স্থানীয় যুবনেতা আবু হানিফ, হারুনুর রশীদ প্রমুখ।
অভিযোগ বিষয়ে সিপি বাংলাদেশ লিমিটেড এর স্থানীয় ম্যানেজার ড. কবির হোসাইন বলেন, আমাদের এই খামারের মাধ্যমে পরিবেশের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। আজ বিভিন্ন দপ্তর থেকে কর্মকর্তারা সরেজমিনে ঘুরে গেছেন। এখানে প্রতি মাসে ৩ লক্ষাধিক মোরগ উৎপাদন হয়। চর্তুপাশে নেট দেয়া আছে। তাছাড়া আজকের পর থেকে আরো নেটের বেড়া দিয়ে দুর্গন্ধ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ দু’পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধা করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন