ভারতে লোকসভার মতোই বিধানসভা নির্বাচনেও হরিয়ানার আসন সমঝোতা করতে পারে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের দুই শরিক কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি (আপ)। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সোমবার দলের জাতীয় নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে সরাসরি এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পরে মঙ্গলবার ইতিবাচক বার্তা আসে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলের পক্ষ থেকেও। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে রাহুল গান্ধী সরাসরি কংগ্রেস নেতাদের কাছে জানতে চান, ভোট ভাগাভাগি এড়াতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সহযোগী দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতা সম্ভব কি না। সে সময় হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং হুডা জানান, আপ যত আসন চাইছে তা দিতে গেলে কংগ্রেসের ক্ষতি হবে। কিন্তু তার পর রাহুল সরাসরি জানান, এ ক্ষেত্রে একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত বিজেপিকে হারানো। মঙ্গলবার এআইসিসির নবনিযুক্ত পদাধিকারীদের বৈঠকেও তিনি পদ্মশিবিরের বিরুদ্ধে বিরোধী ঐক্যের পক্ষে কথা বলেন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গেও হাজির ছিলেন ওই বৈঠকে।
অন্যদিকে রাহুলের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়ে আপ সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিং মঙ্গলবার বলেন, ‘আমাদেরও প্রধান লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। হরিয়ানার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা সন্দীপ পাঠক ও সুশীল গুপ্ত আমাদের দলের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।’
প্রসঙ্গত, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত কেজরিওয়াল বর্তমানে তিহার জেলে বন্দি।
কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, হরিয়ানার ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে আপ ১৫-২০টি চেয়েছে। হুডার তা নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে। শেষ পর্যন্ত আপকে পাঁচ থেকে ছয়টি আসন ছেড়ে সমঝোতা হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের লোকসভা ভোটে বিজেপিশাসিত হরিয়ানায় সমঝোতা করেছিল কংগ্রেস ও আপ। সে রাজ্যের ১০টি আসনের মধ্যে একটি কেজরিকে ছেড়ে ৯টিতে লড়েছিল রাহুল-খড়গের দল।
তার মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছেন ‘হাত’ প্রতীকের প্রার্থীরা। বাকি পাঁচটি গিয়েছে ‘পদ্ম’র ঝুলিতে। ২০১৯ সালে ১০টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি। যদিও গত জুলাই মাসে এআইসিসির মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বিধানসভা ভোটে আপের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনা খারিজ করেছিলেন। কেজরির দলের পক্ষ থেকেও হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে ‘একলা চলো’ বার্তা দেওয়া হয়েছিল।
আপের সঙ্গে সমঝোতায় ভালো ফল করেও জয়রাম ফের একা লড়ার বার্তা দেওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-তৃণমূলের মতোই হরিয়ানায় কংগ্রেস-আপ সমীকরণও আদতে ‘ব্যস্তানুপাতিক’। অর্থাৎ আপের বাড়বৃদ্ধি হবে কংগ্রেসের ক্ষতিবৃদ্ধি হলে। আবার একই রকমভাবে কংগ্রেসের উন্নতি হবে আপের অবনতিতে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি আঁচ করে আপাতত বিজেপিকে ঠেকাতে দুই পক্ষ সমঝোতা করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ৫ অক্টোবর এক দফাতেই হরিয়ানার ৯০টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে। গণনা হবে ৮ অক্টোবর।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন