চীনে সুপার টাইফুন ইয়াগির আঘাত, গন্তব্য ভিয়েতনাম

সুপার টাইফুন ইয়াগি শুক্রবার দক্ষিণ চীনের হাইনান দ্বীপে আঘাত হেনেছে। সেখানে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার। এটি গত এক দশকের মধ্যে ওই অঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হতে যাচ্ছে, যা এখন ভিয়েতনামের দিকে এগিয়ে যাবে। শনিবার সেখানে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে চীনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হাইনান উপকূলে ও পার্শ্ববর্তী গুয়াংডং প্রদেশে ইয়াগি আঘাত হানে। এই ঝড়টি ‘একটি ক্যাটাগরি ৪ হারিকেনের সমতুল্য’ বলে নাসা আর্থ ডেটা উল্লেখ করেছে।

হাইনান প্রদেশ ঝড়ের সম্ভাব্য আঘাতের আগে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী ভিয়েতনামের হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

 

এদিকে হংকংয়ে ইয়াগির প্রভাবে রাতভর ভারি বৃষ্টিপাতের পর দুপুরের পরপরই টাইফুন সতর্কতা কমিয়ে আনা হয়। কারণ ঝড়টি শহর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে অতিক্রম করেছে। এ ছাড়া শুক্রবার হংকংয়ের স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন স্থগিত এবং স্কুল বন্ধ ছিল। আবহাওয়ার কারণে শহরে পাঁচজন আহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

তবে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল।

 

এর আগে এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ইয়াগির আঘাতে ফিলিপাইনে অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। তখন অবশ্য এটি ক্রান্তীয় ঝড় হিসেবে আঘাত হানে। ঝড়ের প্রভাবে দেশটির প্রধান দ্বীপ লুজনে বন্যা ও ভূমিধস হয়। এরপর এটি শক্তিশালী হয়ে কয়েক দিনের মধ্যে সুপার টাইফুনে পরিণত হয়।

 

গ্রীষ্ম ও শরৎকালে দক্ষিণ চীন প্রায়ই টাইফুনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেগুলো ফিলিপাইনের পূর্বে উষ্ণ সমুদ্রে তৈরি হয় এবং তারপর পশ্চিম দিকে চলে যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রান্তীয় ঝড়গুলো আরো অপ্রত্যাশিত ও শক্তিশালী হয়ে উঠছে, যার ফলে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাসের কারণে হঠাৎ বন্যা ও উপকূলীয় ক্ষতি হচ্ছে।

‘আশা করি আমরা বেঁচে থাকব’
ইয়াগি দক্ষিণ চীনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর ভিয়েতনামের দিকে এগিয়ে যাবে। সেখানে শনিবার ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হা লং বের আশপাশে উত্তর ও উত্তর-মধ্য অঞ্চলে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর চার লাখ ৫৭ হাজারেরও বেশি সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ শনিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য হ্যানয়সহ চারটি উত্তরাঞ্চলীয় বিমানবন্দর বন্ধ রাখার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি সব উপকূলীয় শহর ও প্রদেশগুলো শুক্রবার থেকেই নৌকা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

কুয়াং নিন প্রদেশের বাসিন্দা ফাম কোয়াং কুয়েন তুয়ান চাউ দ্বীপ থেকে বলেন, প্রায় দুই দশকের মধ্যে তিনি কখনো এমন টাইফুনের সতর্কতা পাননি। তিনি বলেন, ‘আশা করি আমরা টাইফুন থেকে বেঁচে থাকব। আমরা খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। এখানে আমরা সবাই ঝড় ও ভারি বৃষ্টি মোকাবেলায় খুব অভ্যস্ত।’

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন