প্রেসিডেন্ট আব্দুলমাদজিদ তোবুনকে রবিবার আলজেরিয়ার জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনের একজন প্রার্থী ভোট গণনায় অনিয়ম ও কম ভোটার উপস্থিতির অভিযোগ করেছেন।
আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে, তোবুন ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
আবদেলালি হাসানি শেরিফ ৩ শতাংশ ও ইউসেফ আউচিচ ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। দেশটির মোট ভোটারের ৪৮ শতাংশ ভোটার নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। সামরিক বাহিনী সমর্থিত আব্দুলমাদজিদ তোবুনকে মধ্যপন্থী-ইসলামপন্থী হাসানি শেরিফ ও মধ্যপন্থী ধর্মনিরপেক্ষ আউচিচের কাছ থেকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়নি।
হাসানি শেরিফ তার নির্বাচনকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় ভুয়া ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ফল পরিবর্তন করার জন্য তাদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ করেন।
হাসানি শেরিফের মুখপাত্র আহমেদ সাদোক বলেন, ‘এটি একটি প্রহসন।’ তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শারফি ফলাফল ঘোষণার সময় সব প্রার্থীর মধ্যে স্বচ্ছতা ও ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার কথা জানান।
নাম প্রকাশেও অনিচ্ছুক আলজেরিয়ার ওউলদ ফয়েত জেলার এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘যত দিন তোবুন মজুরি, পেনশন বৃদ্ধি ও ভর্তুকি বজায় রাখবে, তত দিন তিনি আমার চোখে সেরা থাকবেন।’
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে ইউরোপে আলজেরিয়া থেকে গ্যাসের রপ্তানি বেড়েছে।
যা সরাসরি আলজেরিয়ার রাষ্ট্রীয় রাজস্ব বাড়াতে সহায়তা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ সহায়তার জন্য বেশির ভাগ অর্থ ব্যবহার করলেও তোবুনের সরকার এর আগে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংস্কারকেও গুরুত্ব দিয়েছিল। তবে মহামারি চলাকালীন বেকারত্ব প্রায় ১৪ শতাংশে নেমে এসেছিল, তা আর ওপরে ওঠেনি। গত বছর দেশটিতে বেকারত্ব ১২ শতাংশের কাছাকাছি ছিল।
সাধারণ নাগরিকদের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো শনিবারের নির্বাচনে কম ভোটদানের ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরিদ ফেরারি বলেন, ভোটদানের হার স্পষ্টভাবে দেখায়, শাসক ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব এখনো অনেক রয়ে গেছে।
গ্যাস সরবরাহকারী হিসেবে ইউরোপে আলজেরিয়ার মূল ভূমিকা থাকলেও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী মরক্কো পশ্চিম সাহারার ওপর তার কর্তৃত্ব স্থাপন করতে স্প্যানিশ ও ফরাসি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে বৃহত্তর স্থিতিশীলতা আনার জন্য আলজেরিয়ার নেওয়া উদ্যোগও ব্যর্থ হয়েছিল। গত বছর একটি অভ্যুত্থানের পর নাইজারে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির মধ্যে মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা অগ্রগতি পায়নি। তবে আলজেরিয়া এই অঞ্চলে এখনো একটি প্রধান সামরিক শক্তি হিসেবে রয়ে গেছে এবং পশ্চিমা শক্তি ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখায় তাদের ঐতিহ্যবাহী অবস্থান থেকে সরে আসার সম্ভাবনাও এ মুহূর্তে নেই।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন