সহিংস সংঘর্ষের জেরে আরো একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুরের পরিস্থিতি। গত কয়েক দিনে দফায় দফায় গোলাগুলি, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা, বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু, মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অবস্থা সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও যৌথ বাহিনী। অন্যদিকে শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদে নেমেছে বহু মানুষ।
রবিবার রাতে বিপুলসংখ্যক নারী ইম্ফলে রাস্তায় নামেন। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তারা।
এই আবহে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মণিপুরের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রশাসন সচেষ্ট।
সাম্প্রতিক সহিংস সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পাশে রয়েছে তার রাজ্যের বিজেপি সরকার। নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকাও তুলে দেন তিনি। এ ছাড়া মণিপুর পুলিশের কর্মকর্তা কে খাবিব (আইজিপি, ইন্টেলিজেন্স) বলেন, ‘রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলোর কারণে মণিপুর পুলিশ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেলা সদরে রয়েছেন ও পরিস্থিতি মনিটর করছেন।
’
ড্রোনের সাহায্যে হামলা চালানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। পুলিশের সন্দেহ হামলাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। তার পর থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় হামলা হয়েছে এবং কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের সঙ্গেও কুকি সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ।
দিল্লির মেইতেই আহ্বায়ক কমিটির সেরাম রোজেশ বলেন, ‘মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি কিন্তু খুবই উদ্বেগজনক।
আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হস্তক্ষেপ করার জন্য। মেইতেই গোষ্ঠীর মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চলছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণের জন্য যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা কারা জোগান দিচ্ছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কুকি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় কর্মরত সংগঠনের পক্ষ থেকে হাতজালহই হাওকিপ বলেন, ‘এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে কুকি গোষ্ঠীর মানুষের ওপর যে অত্যাচার চলছে সে বিষয়ে রাষ্ট্র নীরব রয়েছে। আমরা দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আমাদের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। কিন্তু কিছুই হয়নি। এই মুহূর্তে মণিপুরে যা হচ্ছে, তা খুবই চিন্তার। কুকিদের ওপর অত্যাচার চলছে এখনো। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না।’
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া পোস্টকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ কর্মকর্তা খাবিব বলেন, ‘আমি জনসাধারণকে অনুরোধ করব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা দেখছেন, তার ভিত্তিতে বিশ্বাস করবেন না। গুঞ্জনে কান দেবেন না। যদি কিছু চোখে পড়ে এবং সেই সম্পর্কে কিছু জানতে চান তাহলে আমাদের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করুন বা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম মনিটরিং সেলে যোগাযোগ করুন।’
এদিকে সোমবার সকাল থেকেই অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। মণিপুরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছে ইম্ফলের শিক্ষার্থীরা।
কেন আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর?
পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় চার মাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও সহিংস সংঘর্ষের কারণে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে মণিপুরে। ইম্ফলের কৌত্রুক এলাকায় সশস্ত্র আক্রমণে এক নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়, আহত হয় একাধিক ব্যক্তি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা পাহাড় থেকে কৌত্রুক ও পার্শ্ববর্তী কাদাংবন্দের নিচু এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালায়। হতাহতের পাশাপাশি বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাশেই রয়েছে কুকি জনবহুল পার্বত্য জেলা কাংপোকপি। অভিযোগ তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। এর পর থেকেই বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের পরিস্থিতি।
গত সপ্তাহে মইরাংয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এক বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর পাশাপাশি মণিপুরের জিরিবাম জেলায় সহিংসতায় চারজন সন্দেহভাজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য ও এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আসাম সীমান্তবর্তী জিরিবামের মংবুং গ্রামের কাছে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, জিরিবামে মেইতেই সম্প্রদাইয়ের এক প্রবীণ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর সহিংসতা আরো ছড়িয়ে পড়ে।
ওই এলাকায় এখনো উত্তেজনা রয়েছে এবং পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংসতায় অত্যাধুনিক ড্রোন ও আরপিজি (রকেটচালিত বন্দুক) ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণত যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়।
সেরাম রোজেশ বলেন, ‘মইরাংয়ে আমার বাড়ি। একটা শান্ত জায়গায় এভাবে হামলা চালানো হয়েছে, ভেবেই শিউরে উঠছি। ঘটনায় যার মৃত্যু হয়েছে তিনি মেইতেইয়ের একজন প্রবীণ সদস্য। তাকে এভাবে প্রাণ দিতে হলো, এই বিষয়টা খুবই দুঃখের।’
পুলিশ সন্দেহ করছে, যে বোমার বিস্ফোরণে ওই প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে সেটি ছোড়া হয়েছিল সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাইরেমবাম কোইরেঙের বাড়িকে লক্ষ্য করে। কাছাকাছি একটি জায়গায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ওই প্রবীণ। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। একাধিক জায়গায় গত সপ্তাহে একই রকমের বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
শুধু তা-ই নয়, পুলিশ জানিয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার লুট করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানে মোতায়েন যৌথ বাহিনী তা রুখতে সমর্থ হয়। হামলাকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের শেল এবং শূন্যে গুলি ছোড়া হয়। এদের মধ্যে একদল হামলাকারী পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়, যাতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি
বর্তমান পরিস্থিতির প্রভাব জনজীবনে পড়েছে। রাস্তাঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে কয়েক দিন। বহু এলাকায় দোকান-বাজার বন্ধ রয়েছে। রবিবার রাজ্যপাল এল আচার্যর সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তার সঙ্গে ছিলেন ১৮ জন বিধায়ক।
এদিকে সোমবার সকালে ইম্ফলে পুলিশের ডিজি, নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে রাজভবনের দিকে রওনা দেয় মণিপুরের স্কুল ও কলেজের কিছু শিক্ষার্থী। এর পাশাপাশি আধাসামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং নৈতিক কারণে ৫০ জন বিধায়কের পদত্যাগও দাবি করে তারা। রাজভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভও করে।
ধনমঞ্জরি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘খাঁচায় থাকা আর ইম্ফলে থাকার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই—এই বার্তা বোঝানোর জন্য আমরা মিছিল করছি। কুকিরা জানিয়েছে, তাদের কাছে যে অস্ত্র রয়েছে তা দিয়ে তারা ২০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করতে পারে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা তুলে দিয়ে ইউনিফায়েড কমান্ড জারি করার কথাও জানাচ্ছি।’
মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেও সোচ্চার হয়েছেন অনেকেই। রবিবার রাতে বহু নারী রাস্তায় নেমে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
অন্যদিকে কুকি সম্প্রদায় সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সহিংস সংঘর্ষে অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার চিন্তার কারণ বলেই পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ড্রোন ও অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার
ড্রোন হামলা রুখতে অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আইজিপি (ইন্টেলিজেন্স) কে খাবিব সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক হামলায় ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই হামলা রুখতে অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করছে পুলিশ। পরিস্থিতির কথা ভেবে রাজ্য পুলিশ আরো অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম এবং অ্যান্টি ড্রোন গান কেনার কথাও ভাবছে।’
এদিকে কুকিদের পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। হাতজালহই হাওকিপ বলেন, ‘কুকিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। এত টাকা কোথায় যে অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করবে? তাদের বিরুদ্ধে এই জাতীয় অভিযোগ তুলছে, কিন্তু এই সম্প্রদায়ের এত মানুষ যে প্রাণ হারাল সে বিষয়ে তো কেউ কিছু বলছে না!’
ওই সম্প্রদায়ের এক সদস্য প্রিম ভাইপেই, যিনি আসাম ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন, তিনি বলেছেন, ‘দরিদ্র কুকিদের কাছে এত আধুনিক অস্ত্র কোথা থেকে আসবে? যদি আমাদের কাছে অস্ত্রই থাকত তাহলে আমরা আমাদের ভিটামাটি ছেড়ে উদ্বাস্তুর মতো থাকতে বাধ্য হতাম? গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আমার ভিটামাটি ছাড়তে বাধ্য হই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মণিপুরের এক বাসিন্দা আবার পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তার কথায়, ‘এখানে পরিস্থিতি যা তাতে রাস্তায় বের হওয়া দুষ্কর। কুকিদের সশস্ত্র সদস্যরা সর্বত্র হামলা চালাচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট মহল কী বলছে?
মণিপুরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মায়ুম শর্মা বলেন, ‘মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। রবিবার রাতে প্রায় ৯০০ নারী রাস্তায় মশাল হাতে নেমে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিও করছেন। আজ ছাত্ররা পথে নেমেছে, অবস্থান বিক্ষোভ করছে। এই দৃশ্য গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা দেখছি। বিষয়টা হলো প্রশাসন কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। এখনো যদি পরিস্থিতি সামাল না দেওয়া যায় তাহলে সমস্যা বাড়বে।’
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রবীণ সাংবাদিক নিংলুন হাংঘালও। তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে আসামে রয়েছি। কিন্তু মণিপুরে আমার পরিচিতদের মুখে তাদের পরিস্থিতির কথা শুনেছি। বেশ উদ্বেগজনক অবস্থা। নতুনভাবে সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে।’
যে ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে সে বিষয়েও তারা পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। তাদের মতে, ‘সাম্প্রতিক ঘটনায় যে ধরনের অত্যাধুনিক হাতিয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে, তা আশঙ্কাজনক। সাধারণত কুকিরা এমন হাতিয়ার ব্যবহার করে না। দুই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীকেই এই হাতিয়ার ব্যবহার করতে দেখা গেছে, যা আরো উদ্বেগজনক। প্রশ্ন হলো, কারা জোগাচ্ছে এই অস্ত্র।’ এই হাতিয়ারের পেছনে বড় কোনো শক্তি থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন দুজনই।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন