যে কারণে পদত্যাগ করেছিলেন সোহেল তাজ

২০০৯ সালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৫ মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। সম্প্রতি তিনি নিজের পদত্যাগের কারণ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করেছেন।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সোহেল তাজ বলেন, যেদিন আমি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেদিন আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। আমি জানতাম, এটা বড় একটি দায়িত্ব।

আমি বাংলাদেশকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেই সময়ে আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নই। রাজনীতি শুরু করেছি মাঠ থেকে। প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর আমাদের দল মাত্র ৫৮টি আসন পেয়েছিল।

বিরোধী দলের রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক কষ্ট সয়েছি।

 

পদত্যাগের পেছনের কারণ জানাতে গিয়ে সোহেল তাজ বলেন, আমি দুর্নীতি ও অনিয়মের সাক্ষী হয়েছিলাম। বিডিআর বিদ্রোহের তদন্তে যে অনিয়ম হয়েছিল, তা আমাকে হতাশ করেছিল। পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছিল, তারা আমার কথা শুনবে না।

আমি মনে করেছিলাম, আমাকে এবং আমার পরিবারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

 

আওয়ামী লীগের এ সাবেক নেতা স্মরণ করেন, পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর আমি যুক্তরাষ্ট্র চলে গিয়েছিলাম। সেখানে শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় আমি বারবার বলেছি, আমাকে ছেড়ে দিন। কিন্তু তিনি জবাব দিয়েছিলেন, ‘না, তোমাকে থাকতে হবে। তোমার কী লাগবে? দলের পদ?’ আমি তখন বলেছিলাম, থাকব না।

 

এমন ফোনালাপের এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা গান গাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন—‘আমি তোমাকে ছাড়ব না, আমি কাউকে ছাড়ি না’। সোহেল তাজ বলেন, এটি শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর এমন কথা কী বোঝাচ্ছিল? এটা কি হুমকি ছিল, নাকি স্নেহের প্রকাশ?

পদত্যাগের পর তাকে নাজেহাল হতে হয়েছিলো বলেও অভিযোগ করেন সোহেল তাজ। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চলছিল। দেশে ফিরে দেখলাম, গোয়েন্দারা আমাকে অনুসরণ করছে। পুরো পরিস্থিতি ছিল আতঙ্কের।

সোহেল তাজ জানান, আমি ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতার হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছি। ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়েছিল। আমি গণভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। রাত ১২টার দিকে তিনি আমাকে ডেকে নেন। সেখানে তার সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আমার অনেক তর্ক হয়। ওই রাতে তিনি জাতীয় ৪ নেতা সম্পর্কে অনেক অপ্রীতিকর কথা বলেছেন। সেগুলো আমি বলতে চাই না। যা শুনে আশ্চর্য হয়েছিলাম, অনেক আঘাত পেয়েছিলাম। তার কাছ থেকে জাতীয় ৪ নেতা সম্পর্কে এমন মন্তব্য আশা করিনি।

সাক্ষাৎকারের শেষ পর্যায়ে সোহেল তাজ তার রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তার পদত্যাগের কারণ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন করে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন