সিলেটে বন্ধ হচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশার দাপট, অভিযান হবে কারখানায়ও

টমটম, ইজিবাইক, অটোরিকশা। সিলেটে এই তিন নামে চলে ব্যাটারিচালিত নিষিদ্ধ রিকশা। ঘটায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়। বেপরোয়া গতির কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটায় রিকশাটি। যাত্রী উঠলেই আদায় করা হয় গলাকাটা ভাড়া। ৫ আগস্টের পর চালকরা সিলেটের অলি-গলি ছেড়ে উঠে এসেছেন  মহানগরের সব ব্যস্ততম সড়কে। ফলে এসব সড়কে বেড়েছে যানজট, বিশৃঙ্খলা।
 

বিআরটিএ’র নিবন্ধনহীন- সবদিক থেকে ক্ষতিকর এই নিষিদ্ধ রিকশার চলাচল বন্ধে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তাঁর দুই মেয়াদে কয়েক দফা উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। বার বার ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়েও কমাতে পারেনি এসব রিকশার দাপট। অনেক সময় প্রশাসনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সড়কে আন্দোলনে নেমে যান এসব অবৈধ রিকশার চালক। তবে এবার তাদের দৌরাত্ম্য দমাতে কঠোর পথে হাঁটছেন এসএমপি’র নতুন কমিশনার মো. রেজাউল করিম (পিপিএম-সেবা)। মহানগরের মূল সড়কগুলোতে এসব রিকশার চলাচল বন্ধের পাশাপাশি এসবের কারখানা ও বেচাকেনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
 

 

 

জানা যায়, এসএমপি কমিশনার রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক সংগঠন ও বিআরটিএ-সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি ছিলো- আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তারা যেন মহানগরের মূল সকল সড়ক থেকে চলে যায়। ৭ দিনের মাথায় কঠোর অভিযানে নামবে এসএমপি’র ট্রাফিক শাখা। মূল সড়কে পেলেই জব্দ করা হবে রিকশা, চালককে দেওয়া হবে আইনানুগ শাস্তি। এছাড়া এসব রিকশা তৈরির কারখানা এবং বিক্রির প্রতিষ্ঠান বন্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

এ বিষয়ে এসএমপি কমিশনার মো. রেজাউল করিম (পিপিএম- সেবা) সিলেটভিউ-কে বলেন- ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকদের। এই সময়ে তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে আমাদের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিংসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো হবে। আশার করছি- সংশ্লিষ্ট সবাই আমাদেরকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করবেন এই বিষয়ে। কারণ- সিলেট আমাদের সবার। নিজেদের শহরকে নিজেরাই পরিপাটি রাখতে হবে। নির্দেশনা না মানলে ৭ দিন পর থেকে কঠোর অভিযানে নামবে ট্রাফিক পুলিশ। মূল সড়কে পেলেই জব্দ করা হবে রিকশা, চালকের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। এছাড়া সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব রিকশা তৈরির কারখানা এবং বিক্রির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

প্রচারণার অংশ হিসেবে সোমবার রাতে এসএমপি’র মিডিয়া শাখা থেকে সংবাদমধ্যমে এবিষয়ক বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

 

উল্লেখ্য, ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করার জন্য ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরে মোট তিন দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। মাঝেমধ্যে কিছু পুলিশি তৎপরতা দেখা গেলেও তদারকির অভাবে ক্রমান্বয়ে সিলেটসহ সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে এসব রিকশা। সর্বশেষে চলতি বছরের মে মাসে মন্ত্রিসভার এক সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাপারে আসে নতুন সিদ্ধান্ত। বলা হয়- ঢাকাসহ সব মহানগরের মূল সড়কে চলতে পারবে না এসব রিকশা। চলবে শুধু অলি-গলিতে। কিন্তু সে নির্দেশনাও না মেনে সিলেটের সব রাস্তায় বর্তমানে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে বিদ্যুৎখেকো এসব রিকশা। এ অবস্থায় এসএমপি’র নবাগত কমিশনারের নির্দেশনা কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে সিলেট মহানগরবাসীকে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন