রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতাদের ড. ইউনূসের আহ্বান

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মিয়ানমারে সংকটের মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বিগত ৭ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, জাতিসংঘের একাধিক সাধারণ অধিবেশন, মানবাধিকার কাউন্সিল এমনকি নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু সেসব উদ্যোগ কাজে আসেনি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান এবং তাদের উপর হওয়া গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতাকে স্বীকৃতি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান তিনি।

 

গতকাল মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে তিনটি প্রস্তাব দেন তিনি। 

সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে এই সভার সহ-আয়োজক ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া এবং গাম্বিয়া। বহুপাক্ষিক এই সভায় কী-নোট স্পিকার হিসেবে নিজ বক্তব্যে তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

 

প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সব অংশীদারদের নিয়ে দ্রুততম সময়ে কনফারেন্স আয়োজন, এবং কনফারেন্সের সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সৃজনশীল এবং অগ্রবর্তী পন্থা নির্ধারণ কর। দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’ আরও বেগবান করতে হবে এবং সবশেষে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন করতে হবে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবছর ৩২ হাজার নতুন জন্ম নেওয়া শিশু বাংলাদেশের জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে।

বিগত ২ মাসেই নতুন করে ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

 

শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এই সংকট বাংলাদেশের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত হুমকি বহন করছে। বিষয়টি প্রথাগত এবং অ-প্রথাগত নিরাপত্তা সংকটেরও জন্ম দিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটে থমকে আছে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। বাংলাদেশ তার সক্ষমতার চূড়ান্তে পৌঁছেছে।

 

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পুরো বিষয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির নতুন স্তর যোগ করেছে। মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে সব সম্প্রদায়ের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিয়ে অংশীদারদের সাথে একত্রে কাজ করার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করেন অধ্যাপক ইউনূস। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণের আহবান জানান তিনি।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন