নেপালে বন্যায় রবিবার এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ৫৯ জন। এদিন বন্যাকবলিত রাজধানীর বাসিন্দারা নিজেদের কাদামাখা ঘরে ফিরে এক ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে পায়। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বন্যায় কাঠমাণ্ডুর সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেখানে রাজধানীর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। শহরকে নেপালের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করা মহাসড়কগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
একটি নদীর তীরে বস্তিতে বাস করেন কুমার তামাং (৪০)।
তিনি এএফপিকে জানান, তিনি ও তার পরিবার শনিবার দিবাগত রাতে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাদের ঝুপড়িতে পানি ঢুকে পড়েছিল। রবিবার তিনি বলেন, ‘আজ সকালে ফিরে এসে দেখি সব কিছুই অন্যরকম লাগছে। আমরা ঘরের দরজা পর্যন্ত খুলতে পারিনি, কাদা আটকে ছিল।
গতকাল আমরা ভেবেছিলাম, পানিতে ডুবে মরব, আর আজ পানি নেই পরিষ্কার করার।’
নেপালের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশজুড়ে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরো ৬৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঋষি রাম তিওয়ারি এএফপিকে জানান, বেশ কয়েকটি মহাসড়ক ধ্বংসাবশেষের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে, যেগুলো খোলার জন্য বুলডোজার ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এর ফলে কাঠমাণ্ডু দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর কাঠমাণ্ডু পোস্ট পত্রিকাকে জানিয়েছে, রাজধানী যে উপত্যকায় অবস্থিত, সেখানে শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এটি ১৯৭০ সাল থেকে কাঠমাণ্ডুতে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এএফপির তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭০-৮০ শতাংশ বর্ষা মৌসুমে হয়ে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাণঘাতী বন্যা ও ভূমিধসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর নেপালে বৃষ্টিজনিত দুর্যোগে ২৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিসংক্রান্ত দুর্যোগ সাধারণ ঘটনা হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন