দুর্নীতির্দুবৃত্তায়নের কারণে সমগ্র দেশ আজ ক্ষত-বিক্ষত ও অসুস্থ। অসুস্থ দেশটাকে সুস্থ করতে হলে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথেই সংগ্রাম করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারন সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক।
তিনি বলেন, দেশে এক ধরনের সামাজিক নৈরাজ্য চলছে। অকার্যকর হয়ে পড়েছে সমগ্র সরকার ব্যবস্থা। সরকার ক্রমান্বয়ে রাজনৈতিক কতৃত্ব হারাতে বসেছে। এ অবস্থায় যে রাজনৈতিক শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরনে সকল দেশপ্রেমিক-প্রগতিশীল শক্তিকে নতুন করে চিন্তা করতে হবে, সংগঠিত হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) তোপখানার বাংলাদেশ শিশু-কল্যান পরিষদের কনফারেন্স লাউঞ্জে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ'র উদ্যোগে "গণমানুষের মুক্তি সংগ্রাম ও মওলানা ভাসানী"-শীর্ষক আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন আমাদের জাতীয় মুক্তির দিশারি। মুজিবনগর সরকারে উপদেষ্টা ছিলেন মওলানা ভাসানীকে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে ভারত নজরবন্দী করে রাখে। আমাদের দেশের মানুষ ৯ মাস জীবন দিয়ে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছে। সেই দেশ আজ দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের ক্ষত-বিক্ষত সেই সসময় ভাসানীর 'খামোশ' উচ্চারন বড়ই প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় মওলানা ভাসানী আমাদের ঐক্যের প্রতীক হতে পারে। ভাসানী তার যুগের চেয়েও এগিয়ে ছিলেন। তিনি মানুষের অন্তরকে ধারন করতে পারতেন। স্বাধীনতার পর তিনি যে জাতীয় ঐক্যের সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন সেটি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে দেশের ইতিহাস ভিন্ন হতো।
সভাপতির বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বিশ্বের যেখানেই নিয়াতিত মানুষের সংগ্রাম সেখানেই মওলানা ভাসানী কন্ঠ ছিল উচ্চকিত। ফলে তিনি উপমহাদেশের গন্ডি ছারিয়ে আফ্রো-এশিয়া-লাতিন আমেরিকার নির্যাতিত ও স্বাধীনতাকামী মানুষের নেতা হয়ে উেঠেছিলেন। তিনি ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট নাসেরের সঙ্গে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন বিষয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, মাও সেতুংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। তিনি ভিয়েতনামের হো চি মিনের সংগ্রামের সাথেও একাত্বতা প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী বলতেন জালিমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায় সঙ্গত। তিনি বলতেন জালেম যখন মজলুমের ওপর অত্যাচার করবে, তখন তাকে প্রতিরোধ করাই হলো নৈতিকতা। মওলানা ভাসানীর ভূমিকাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ভিত্তি ভূমি স্থাপনে। সেই ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণ করেছেন। তাই তাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস পরিপূর্ণ হয় না, এ কথা সবাইকে স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের সাথে আপসকামিতা এবং ভ্রান্ত রাজনীতি বাংলাদেশের রাজনীতি যখন পথহারা তখন মওলানা ভাসানী আমাদের আলোকবর্তিকা। মওলানা ভাসানী এদেশের মানুষের কাছে ছিলেন, আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া'র সভাপতিত্বে ও মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলু'র সঞ্চালনায় জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম. এ জলিল, মওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি সদ্দিকুল ইসলাম, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ জাসদ নেতা এ এফ এম ইসমাইল চৌধুরী, হুমায়ূন কবির, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব এহসানুল হক জসীম, ঢাকা মহানগর সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর নেতা আ সম মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন