ঘুষের টাকা না পেলে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানী করেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের মহেশপুরে স্বরুপপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিস মগেরমুল্লুক বানিয়ে ফেলেছেন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাস। ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির পাশাপাশি নিচ্ছে খজনার অতিরিক্ত টাকা। ঘুষের টাকা পেলে সেবা গ্রহীতাদের অহরহ হয়রানি করেন। জমির নামজারি, ডিসিআর ও মিসকেসসহ না খাত থেকে কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে ইউনিয়নের বাসিন্দরা অভিযোগ করেছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাস বেশি হয়রানি করেন নামজারি, দাখিলা কাটা ও মিসকেস নিয়ে। নামজারীর জন্য অনলাইনে আবেদন করা হলেও প্রতিবেদন নিতে তাকে ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে প্রতিবেদন দিতে দেরী করে। এ ভাবে তিনি মানুষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আবার নামজারী কেস মঞ্জুর হলে ডিসিআরের জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবী করেন। এরপর হোল্ডিং নম্বরের জন্য ভূমি অফিসে গেলে সেখানেও থাবা বসান নিকুঞ্জ কুমার। স্বরুপপুর ইউনিয়নের কোশাডাঙ্গা গ্রামের আবু বক্কর অভিযোগ করেন, তার পিতা আবরুজ আলী ও মা আরজু বানুর হুদা কুশাডাঙ্গা মৌজার ৩৬০৪ নং দাগে ৫৩ শতক ধানী জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য গেলে অতিরিক্ত টাকা না দেয়া পর্যন্ত নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাস খাজনার রশিদ দেননি। তিনি অভিযোগ করেন, তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে ১০২ টাকার দাখিলা দিয়েছে। একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন তাকে ৮০ টাকার দাখিলা দিয়ে তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়েছে। কুসুমপুর গ্রামের ইদু ফকিরের ছেলে আবুল কাসেম বলেন কুসুমপুর মৌজার ৮৬৪ খতিয়ানে ৭৬ ও ৪৫৭ নং দাগে ধানী ও ডাঙ্গা জমির ৭২ শতক জমির নামজারি ও ভূমি কর পরিশোধ জন্য ভূমি কর্মকর্তা নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাসের কাছে গেলে তিনি পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন। তিনি শেষমেষ সাড়ে ৪ হাজার টাকায় রফা করেছেন বলে জানান। কেশবপুর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী মন্ডলের ছেলে হোসেন আলী অভিযোগ করেন, তাকে ১৮০ টাকার দাখিলা দিয়ে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাস। আর যারা ঘুষের টাকা দিতে পারে না, তাদের খাজনা নেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। কুশাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন জানান, তিনি খাজনা দিতে বহুবার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাসের কাছে গেছেন, কিন্তু ঘুষর টাকা না দিলে জমির খাজনা গ্রহন করেননি। তিনি বলেন আমি ৩ হাজার টাকা খাজনা দিয়ে ১৮০ টাকার দাখিলা দিয়েছে। এ ভাবে নিকুঞ্জ শত শত জমির মালিকের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না। একই গ্রামের মাজেদা বেগমও ৩ হাজার টাকা দিয়ে ১৮০ টাকার দাখিলা পেয়েছেন। এ বিষয়ে স্বরুপপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নিকুঞ্জ কুমার বিশ্বাস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ সব অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, জমির মালকরা খুশি হয়ে যা দেন তার বাইরে আমি একট টাকাও গ্রহন করি না। এখন মানুষ যদি খুশি হয়ে বেশি টাকা দেয় তাহলে আমরা কি করার আছে। মহেশপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরিফ শাওন জানান, এবিষয়ে ভূক্তিভোগীরা তার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি নিজে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। তিনি বলেন দুর্নীতি করে কেউ পার পাবেন না।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন