বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও জনতা ৪ জন ডাকাত গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল (১ অক্টোবর) মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা সিলেট মহা সড়কের মডেল বাজার এলাকায় একদল ডাকাত দুটি মোটরসাইকেল ও একটি সাদা রঙের নোহা গাড়ি নিয়ে গরু ভর্তি ট্রাক ব্যারিকেট দিয়ে গাড়ির দরজা টেনে খুলে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে গাড়ির চালক, হেলপার ও গরুর মালিকদের মারধর করে তাদের নোহা গাড়িতে তুলে। এবং ট্রাক থাকা গরু নিয়ে যায় তাদের অন্য ডাকাতরা। পরে নোহা গাড়িতে থাকা লোকজনকে মারধর করে তাদের সাথে থাকা নদগ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। এবং ট্রাকের পিছু নিতে গিয়ে গোপলার বাজার হয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে গরুর মালিরা চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ও গোপলার বাজার টহলরত পুলিশ নোহা গাড়িটিকে ব্যারিকেট দিয়ে আটক করেন। এতে তাদেরকে গাড়ি থেকে নামার জন্য বললে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে আটক করে উত্তম মধ্যম দেন স্থানীয়রা। এবং ডাকাতদের গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করা হয়।
এ খবর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পেয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) রেজাউল হক খাঁন এর দিক নির্দেশনায় নবীগঞ্জ থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার, এসআই পিযুষ কান্তি দেবনাথ তাদের সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আটক ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। এবং মাত্র ৩ ঘন্টার মধ্যেই ডাকাতি হওয়া গরু, গাড়ি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানাযায়, গতকাল (১ অক্টোবর) মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে একটি ঢাকা মেট্রো (ট ১৮-১১১৫) ট্রাকে ৩৯টি গরু নিয়ে সিলেট থেকে গরু ব্যবসায়ী এনায়েতুল এনাতুল বেপারী কিশোরগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেল বাজার সংলগ্ন ব্রীজের উপর আসা মাত্রই পিছন দিক থেকে অজ্ঞাতনামা ১২/১৩ জন ডাকাত ট্রাক ভর্তি বিভিন্ন রংয়ের ৩৯টি ডেকা বাছুর ও একটি ট্রাক গাড়ী যার মূল্য অনুমান ২৬ লক্ষ টাকা। গাড়িতে থাকা লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন কোম্পানীর ৫টি মোবাইল ফোন যার মূল্য অনুমান ১৮ হাজার টাকা এবং নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অস্ত্রের মূখে মারধর করে ট্রাকের চালক, হেলপার ও গরুর মালিক সহ গাড়িতে থাকা লোকজনকে ট্রাক থেকে নামিয়ে তাদের সাদা রঙ্গের নোহা গাড়িতে তুলে। এবং ট্রাকটি ডাকাতদলের কয়েকজন চালিয়ে নিয়ে যায়। এবং তাদের নোহা গাড়িটি মহা সড়ক দিয়ে না গিয়ে আউশকান্দি হয়ে গোপলার বাজার ফাঁড়ি পথে যাওয়ার সময় ডাকাতদের গাড়িতে থাকা লোকজন চিৎকার দিলে গোপলার বাজার আসা মাত্রই চিৎকার দিলে বাজার এলাকার স্থানীয়
লোকজন ও ডিউটিরত গোপলার বাজার ফাড়িঁর পুলিশ নোহা গাড়িটিকে ব্যারিকেট দিয়ে আটক করেন। এবং এ বিষয়টি বিভিন্ন লোকজন যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে লাইভ করলে সাথে সাথে ঘটনাটি চতুরদিকে ছড়িয়ে পড়লে গোপলার বাজার এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে যান। এবং উত্তেজিত জনতা ডাকাতদের উত্তম মধ্যম দিয়ে তাদের নোহা ভাংচুর করেন। পরে পুলিশ ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। উক্ত ডাকাতির ঘটনার পরদিন ২ অক্টোবর মোঃ এনায়েতুল এনাতুল বেপারী (৩৮) বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্ত বার গ্রহণ করেন এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার।
উল্লেখ্য যে, গতকাল রাতে গোপন সূত্রের মাধ্যমে ডাকাতির খবর পেয়ে মাত্র ৩ ঘন্টার মধ্যেই হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) রেজাউল হক খাঁন এর দিক নির্দেশনায় নবীগঞ্জ থানার নব নিযুক্ত অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এসআই স্বাধীন চন্দ্র তালুকদার, এসআই পিযুষ কান্তি দেবনাথ তাদের সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ডাকাতদলের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত সদস্যরা হলো, মৌলভীবাজার উপজেলার শেরপুর ব্রাহ্মনগ্রামের মৃত আজমান আলীর পুত্র মোঃ সৈয়দুর রহমান (৩০), ওসমানীনগর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের জফির মিয়ার পুত্র সামসুদ্দিন (২৯), নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের নুরুল মিয়ার পুত্র উজ্জল হোসেন (২১), একই গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের পুত্র রেফু মিয়া (২৪)।
নবীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীরা সবাই ডাকাত চক্রের সদস্য। আসামীরা ডাকাতির ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের হবিগঞ্জ কোর্টে প্রেরণ করা হলে আদালতের মাধ্যমে ডাদেরকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন