বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৬

ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েল আজ বৃহস্পতিবার ভোরে কেন্দ্রীয় বৈরুতে বোমা হামলা করেছে। এ হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়। ইসরায়েল বলেছে, তারা বৈরুতে একটি সুনির্দিষ্ট বিমান হামলা চালিয়েছে। রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শীরা একটি বিশাল বিস্ফোরণ শোনার কথা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় বৈরুতের বাচৌরা পার্লামেন্টের কাছাকাছি একটি ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

 

লেবাননের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। লেবাননের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে প্রচারিত একটি ছবিতে (যা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি) ক্ষতিগ্রস্থ ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ উপশহর দাহিয়েহ-তে আঘাত হেনেছে।

যেখানে গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। সেখানে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

 

এদিকে ইসরায়েল গতকাল বুধবার লেবানলে ফের আগ্রাসন শুরু করে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া স্থল আক্রমণ চালাতে অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর গতকাল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেখানে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও আইডিএফের মুখোমুখি লড়াইয়ের খবর মিলেছে।

 

লেবাননের হিজবুল্লাহর মুখপাত্র জানিয়েছেন, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ‘যুদ্ধের প্রথম ধাপের’ অংশ। রয়টার্স ও এনবিসি খবরে বলা হয়, হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শত্রুদের মোকাবেলা ও প্রতিহত করতে আমাদের বাহিনী ও যোদ্ধারা পুরোপুরি প্রস্তুত।’ আফিফ আরো বলেন, আইডিএফকে মোকাবেলা করতে তাদের সশস্ত্র সংগঠনটির হাতে পর্যাপ্ত অস্ত্র আছে।

 

এদিকে আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল লেবাননের অভ্যন্তরে সম্মুখলড়াইয়ে ২২ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন ইতান ইতঝাক ওস্তার নিহত হয়েছেন। তিনি ছিলেন ইগোজ ইউনিটের টিম কমান্ডার। গেরিলা হামলার জন্য বাছাই করা কমান্ডোদের নিয়ে ইগোজ ইউনিট গঠিত।

এদিকে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ঘটনায় ইরান ও লেবাননের মানুষ সড়কে নেমে উল্লাস প্রকাশ করেছে। এ সময় আতশবাজির ঝলকানি দেখা গেছে। অনেকে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ প্রকাশ করে। হামলার খবর জানার পর পরই ইরানের রাজধানী তেহরানের সড়কে নেমে আসে অনেক মানুষ। তাদের অনেকেই ইরান ও হিজবুল্লাহর পতাকা ওড়ায়।

তবে এই হামলাকে উসকানি হিসেবে দাবি করে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। এ ব্যাপারে সাবেক ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আভি মেলামেদ বলেছেন, ‘ইরানের হামলা হলো ইসরায়েলকে বড় ধরনের পাল্টা হামলার জন্য উসকানি দেওয়া—আমরা ইরানি লক্ষ্যবস্তুগুলোতে উল্লেখযোগ্য ও তাৎক্ষণিক ইসরায়েলি জবাব দেখতে পাব।’

এদিকে ইসরায়েল প্রতিক্রিয়া জানালে ইরানও পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছে। গতকাল সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ‘আমাদের পদক্ষেপ শেষ হয়েছে, যদি না ইসরায়েলি শাসক আরো প্রতিশোধের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের জবাব আরো জোরালো ও শক্তিশালী হবে।’

অন্যদিকে ইরানের হামলার ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ‘এ বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’

ইরান ইসরায়েলে যে ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, তার একটি তেল আবিবের কাছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদরদপ্তরের কাছে গিয়ে পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে আসা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মোসাদের সদরদপ্তরের কাছে বিশাল এক গর্ত তৈরি হয়েছে। এদিকে ইরান ও ইসরায়েলকে সংযমের আহবান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, ভারত, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন