লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি আবাসিক এলাকার বহুতল ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় গত বুধবার মধ্যরাতে চালানো ওই হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, দক্ষিণ লেবাননে তাদের আটজন সেনা নিহত হয়েছেন। ওই ঘোষণার পরপরই লেবাননে এই হামলা চালানো হয়।
এদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার ব্যাপারে সায় দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ভবনটিতে বিমান হামলা হয়েছে, তা বাচৌরাতে অবস্থিত। বহুতল ওই ভবনটি একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল, যেখানে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর যাতায়াত ছিল বলে দাবি করেছে আইডিএফ। এই ভবনে আক্রমণের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
এই প্রথম বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে হামলা চালালো ইসরায়েল। এর আগে মূলত দক্ষিণ বৈরুতে আক্রমণ করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে সংঘাত চলাকালে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো ধ্বংস করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলি বাহিনীকে পরাস্ত করার জন্য তাদের যথেষ্ট জনবল ও গোলাবারুদ রয়েছে বলেও জোর দিয়ে দাবি করেছে তারা।
এর আগে আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছিল যে লেবাননের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে থাকা ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’ গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য আরো পদাতিক ও সাঁজোয়া সেনা জড়ো করা হয়েছে।
লেবাননে গত বুধবার রাতে সর্বশেষ হামলার সময় বৈরুতের হাহিয়েহ অঞ্চলে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। চতুর্থ শব্দটি শোনা গেছে একদম শহরের মধ্যাঞ্চল থেকে। আইডিএফ হাহিয়েহতে বসবাসকারীদের সতর্ক করার পর সেখানে আরো দুটি বিমান হামলা হয়েছিল। এই অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
গত বুধবার রাতে বিমান হামলার আগে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বেসামরিক ও সামরিক মিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় ৪৬ জন নিহত ও ৮৫ জন আহত হয়েছে। লেবাননে সর্বশেষ বিমান হামলায় নিহতদের মাঝে একজন স্থায়ী মার্কিন নাগরিকও ছিলেন।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা ওই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘লেবাননের অনেক বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর মতো তাঁর মৃত্যুও একটি দুঃখজনক ঘটনা।’
লেবাননের কর্তৃপক্ষের মতে, দুই সপ্তাহ ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলার কারণে হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ কারণে ১২ শতাধিক মানুষ নিহত ও ১২ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধের কারণে লেবানন ও ইসরায়েলের মাঝে এক বছর ধরে আন্তঃসীমান্ত বিরোধ চলছে। অবশেষে এবার ইসরায়েলে লেবাননে এ রকম বড় মাত্রায় হামলা চালিয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় বাইডেনের ‘না’
এদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার ব্যাপারে সায় দেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বুধবার তিনি বলেছেন, ইরানে ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ‘ইসরায়েল কী করতে চলেছে’, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘ইসরায়েলিদের সঙ্গে আলোচনা করবে’।
লেবাননের প্রতি গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের সমর্থন
ইসরায়েলের হামলার মুখে থাকা লেবাননের জন্য সমর্থন জানিয়েছে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল। পাশাপাশি গাজা ভূখণ্ডে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় কাউন্সিলের সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন