চাঁনপুর সীমান্তে আইন আছে প্রয়োগ নেই: রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: চোরাকারবারীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের চাঁনপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচাঁর করা হচ্ছে কোটি টাকার মালামাল। একাধিক মামলার আসামীরা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মাদকদ্রব্য ও বিড়িসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করলেও বিজিবির পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়না। তাই সেনা বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল শুক্রবার (৪ লা অক্টোবর) রাত ১২টা থেকে আজ শনিবার (৫ লা অক্টোবর) ভোর ৫টা পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলার চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলা, আনন্দনগর ও রাজাই এলাকা দিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার চিনি, ফুছকা, নাসির উদ্দিন বিড়ি, গাঁজা, ইয়াবা ও মদ পাচাঁর করেছে চোরাকারবারীরা। এসবের বিনিময়ে ১ হাজার বস্তা রসুন ও ১ মন মাছ ভারতে পাচাঁর করা হয়। পরে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল সিএনজি ও অটোরিক্সা বোঝাই করে একাধিক মামলার আসামী চোরাকারবারী শাহিবুর মিয়া, ফখর উদ্দিন, তোতা মিয়া, বুটকন মিয়া, বুলবুল মিয়া, রফিক মিয়া, নিজাম মিয়া, লাল মিয়া, আকরাম মিয়া, সাদ্দাম মিয়া, জানু মিয়া, সাগর মিয়া ও তোতলা আজাদগং তাদের বসতবাড়ি কামড়াবন্দ, রাজাই, চাঁনপুর ও শিমুলতলা গ্রামসহ বাদাঘাট বাজারে অবস্থিত বিভিন্ন দোকানপাটে নিয়ে মজুত করে। অন্যদিকে একই সময়ে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের নয়াছড়া ও রজনী লাইন এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী চোরাকারবারী কালাম মিয়া, জামাল মিয়া, নজরুল, জহির মিয়া, আক্কল আলী, সোহেল মিয়া ও রুবেল মিয়াগং ভারত থেকে মদ ও কয়লা পাচাঁর করে পাশের টেকেরঘাট সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন বড়ছড়া-জয়বাংলা বাজারের পাশে নিয়ে একাধিক স্থানে মজুত করে। কিন্তু এসব অবৈধ মালামালসহ চোরাকারবারীদের আটকের ব্যাপারে বিজিবি পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে লাউড়গড় গ্রামের এরশাদ মিয়া বলেন- বারেকটিলা-আনন্দনগর এলাকায় বিজিবি দাড়িয়ে থেকে মালামাল পাচাঁর করে। কেউ কিছু বললে বিজিবি মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। উত্তর বড়দল ইপি সদস্য ও বারেকটিলার বাসিন্দা কফিল উদ্দিন বলেন- চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মিজান ও ভিআইপি তাদের টহল পার্টি নিয়ে প্রতিবস্তা চিনি থেকে ১শ টাকা, প্রতিবস্তা ফুছকা ১৫০টাকাসহ মদ ও অন্যান্য মালামাল থেকে বিভিন্ন হারে চাঁদা নিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে মালামাল পাচাঁর করে। আমি এব্যাপারে প্রতিবাদ করার কারণে চোরাকারবারীদেরকে দিয়ে আমাকে প্রাণে মারার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন- প্রতি বস্তা কয়লা থেকে ৫০টাকা করে চাঁদা নেয় বিজিবি। মদ পাচাঁরের ৮লাখ টাকা নিয়ে চোরাকারবারী লাল মিয়া তার ব্যবসায়ীক পার্টনারকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যায়। পরে ক্যাম্প কমান্ডার মিজান রাজাই গ্রামে চোরাকারবারীদেরকে নিয়ে মিটিং করে কিন্তু চোরাচালান বন্ধের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়না। সুনামগঞ্জ জেলার সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া বলেন- চাঁনপুর সীমান্ত চোরাচালানের ব্যাপারে ক্যাম্প কমান্ডার মিজানকে বারবার জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ নেয় না বরং চোরাকারবারীদের দিয়ে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালায়। এব্যাপারে বিজিবির উপরস্থ কর্মকতাদের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন। এব্যাপারে চাঁনপুর ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার মিজানের বক্তব্য নেওয়ার সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬১৩১২৯) নাম্বারে একাধিক বারবার ফোন করার পরও ফোন রিসিভ করেনি। টেকেরঘাট কোম্পানী আতিয়ার রহমান বলেন- চাঁনপুর সীমান্ত চোরালানের বিষয়ে আমি হাবিলদার মিজানকে বারবার সর্তক করেছি,এব্যাপারে আমাদের উপরস্থ কর্মকর্তাকে জানালে তারা আমাকেই বলবে। আমি দেখছি এব্যাপারে কি করা যায়। এই বিয়ষে জানাতে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত দেখায়, কেউ রিসিভ করেনি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন