প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনমূলক কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। সংলাপ শেষে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি কথা জানান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
মাহফুজ আলম জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে সংস্কার কার্যক্রম এবং নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক কাজ সমান্তরালভাবে কীভাবে চলতে পারে তা নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আগামী সাধারণ নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব অনুযায়ী, কীভাবে সংস্কার কাজ করা হবে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ কিভাবে সমান্তরালভাবে চলবে তা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।’
সংলাপের ফলাফল সম্পর্কে মাহফুজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নতুন করে সংলাপের প্রথম দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বামপন্থী গণতান্ত্রিক জোট, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদসহ আরো কয়েকটি দল অংশ নিয়েছে। তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের বিষয়ে এই দলগুলোর কাছে প্রস্তাব চেয়েছে।
আলোচনায় চলমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং আসন্ন দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান বিশেষ সহকারী মাহফুজ। তিনি বলেন, সংলাপে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল অন্তবর্তী সরকারের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছে এবং সব দল এই সরকারকে ‘নিজেদের সরকার’ বলে অভিহিত করেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘তারা (রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ) সরকারের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেন, সরকার যেকোনো মূল্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে, ‘সিন্ডিকেট’ ভেঙে দেওয়া এবং ‘চাঁদাবাজি’ বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মাহফুজ আরো বলেন, সরকার জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সদস্যদের পরামর্শের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে যাতে এটি ভোক্তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারে।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রাথমিক খারাপ অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে এবং সরকার প্রথম থেকেই সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার চেষ্টা করছে।
সংলাপ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারে দু-একজন (ব্যক্তি) আছেন যারা অন্তবর্তীকালীন সরকারের মূল চেতনা ও গণ-অভ্যুত্থানে বাধা সৃষ্টি করছেন। আমরা তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছিলাম।
বিএনপির দাবির প্রতি মাহফুজের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, অসন্তোষ থাকা স্বাভাবিক তবে উপদেষ্টারা দায়িত্ব পালন করছেন কি না তা দেখতে চান।
বিশেষ সহকারী বলেন, আমরা আশা করি তারা জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ বলেন, শুধু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নন, গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ধীরে ধীরে বিচারের আওতায় আনা হবে। আমাদের দিক থেকে আমরা বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও শাখাগুলো সে লক্ষ্যে কাজ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ডিসেম্বরে ছয়টি সুনির্দিষ্ট সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে বলে সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে ঐকমত্য হবে। টাইমলাইন সেই ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতির দিকে কাজ একই সঙ্গে এগিয়ে যাবে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন