বিশেষ প্রতিনিধি :বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার ৯ দিনের মাথায় মেলবোর্নে বাড়ির মালিককে ছুরিকাঘাত করেন মোমেনা সোমা। এ ঘটনায় তার ৪২ বছরের সাজা হয়। অস্ট্রেলিয়ার কারাগারে সাজা ভোগ করতে থাকা সোমা এবার কারাগারে বসেই আরেক নারী বন্দীকে কুপিয়েছেন। ২৭ বছর বয়সী মোমেনা সোমার বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে। তার বাবা একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ করেন। দুই বোনের মধ্যে সোমা বড়। ঢাকার মাস্টার মাইন্ড স্কুল থেকে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল শেষ করে তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করেন। এর পরই তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় যান সোমা। এর নয় দিনের মাথায় তিনি মেলবোর্নে রজার সিংগারাভেলু নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরি নিয়ে হামলা চালান। হামলার পরপরই সোমাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সোমা ওই সন্ত্রাসী হামলা করেন বলে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে। ভিক্টোরিয়া রাজ্যের আইন কারাবিধি অনুযায়ী, সোমাকে কমপক্ষে ৩১ বছর ৬ মাস কারাগারে থাকতে হবে। এর পরই তিনি প্যারোলের আবেদন করতে পারবেন। এই সাজা ভোগ করার সময়ই তিনি আরেক কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের একাধিক গণমাধ্যম। নিউজ ক্রপের মালিকানাধীন দ্য অস্ট্রেলিয়ান এবং ব্রিটেনের ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ভিডিও ট্রায়ালে সোমাকে ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩০ অক্টোবর রেইভেনহল জেলে তিনি সহবন্দীকে কুপিয়ে জখম করেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। ভুক্তভোগী বন্দীও সোমার সমবয়সী। সোমাকে সামনের বছর মার্চে আবার আদালতে তোলা হবে। ম্যাজিস্ট্রেট ক্যারলিন বার্নসাইড অবশ্য ধারণা করছেন, করোনার কারণে শুনানির জন্য কমপক্ষে এক বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০১৫ সালেই তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যেতে চেয়েছিলেন মোমেনা সোমা। তুরস্কের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভর্তিও হয়েছিলেন। কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় সে যাত্রায় তার আর তুরস্ক যাওয়া হয়নি। সে সময় মোমেনা সোমার ছোট বোন আসমাউল হোসনাকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ওই সময় সোমার ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে ঢাকার মিরপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে হোসনা। পরে পুলিশ হোসনাকে গ্রেপ্তার করে। তার গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়েই উঠে আসে এসব তথ্য।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন