শাহাব উদ্দীন , কলামিষ্ট,রাজনীতিক। নিউইয়র্ক । । অনেক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে পাচই আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলো। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিদ্ধান্তের কারনে আটই আগষ্ট জাতির পক্ষথেকে ছাত্র সমাজ আপনাকে অন্তরবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ফুলের মালায় বরন করে নেয় । যদিও অন্য দুটো প্রস্তাব ছিল। কিন্তু আপনার গ্রহনযোগ্যতা ছিল সকলের কাছে আকাশচুম্বী। সর্বস্তরের মানুষ মনে করেছে দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনার মতো মানুষের খুব ই প্রয়োজন। আপনি রাজনীতিবিধ নন। কিন্তু এই পচনশীল সমাজের রাজনীতির ও দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেয়ারে বসে দেশ পরিচালনা করতে হচ্ছে। আপনার সবচেয়ে সুন্দর কথা হলো " আমরা ভূল করবো ধরে দিবেন। আমরা শুধরো। যদি কোন দাবি থাকে লিখে জানাবেন ,পিছন থেকে বলবেন গুতানো দিবেন"। আপনার এধরনের কথায় মানুষ আপ্লূত হয়েছে। এটাই হলো গনতন্ত্রের সৌন্দর্য । আপনার ক্ষমতা গ্রহনের মাত্র দু'মাস হলো । যদিও একটি সরকারের সফলতা ,বা ব্যর্থতা নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো হয়নি । বরং সরকার কে সফলতার দিকে নিয়ে জাতির উন্নয়ন করা ই সবার লক্ষ্যে হওয়া উচিৎ । সেজন্য সচেতন মহলের মনে কিছু প্রশ্নের উদ্ধেগ হয়েছে সে গুলো নিয়ে ভাবতে হবে । যাতে আমারা দেশ পরিচালনায় কোন বড়ো ধরনের ভূল না হয়। দেশ , জাতি ভবিষ্যতে কোন বিদেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের কালো থাবায় না পড়ে । কারন আমাদের মাতৃভূমি নিয়ে অনেক আগ থেকে ই বিদেশিদের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে । আমরা কোন দেশের যেন তাবেদার হয়ে না যাই। সে দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে । রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই সফল গন অভ্যুত্থান যেন কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে সকলের নজর রাখা একান্ত দরকার ।অতীত বিশ্লেষন থেকে ভবিষ্যতের দিকে নজর দেওয়ার জন্য এই আলোচনা । ক্ষমতা গ্রহন করেই আপনি বললেন , ছাত্ররাই হলো নিয়োগ দাতা । এবং দুইজন ছাত্রকে উপদেষ্টা এবং একজন ছাত্রকে আপনার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা) নিয়োগ করেন। জুলাই আগষ্টের নিহতের স্বরনে সহযোগিতার জন্য আপনি সভাপতি শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই কে সম্পাদক করে "শহীদ জুলাই ফাউন্ডেশন "গঠন করেন। এ নিয়ে প্রথমেই জাতির মনে প্রশ্নের উদ্ধেগ হয়। প্রথমত হলো এই গন অভ্যুত্থান ২০/২৫ দিনের আন্দোলনের ফসল নয়। গতএক যুগ ধরে হত্যা ,গুম ,,খুন জেল,জুলুমের মিছিল ,মিটিং মহাবেশে মাধ্যমে বিগত সরকারের উপর মানুষের অনাস্থা ও ঘৃণা জন্মেছিলো । সারা দেশের জনগণ স্বৈরশাসকের পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত ছিল । এই প্রস্তুতির জন্য অবদান দেশের রাজনৈতিক দল গুলো ।কিন্তু ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের কারণে কোন বিরোধী ছাত্র সংগঠন গুলো শিক্ষাংগনে মাথা তুলে দাড়াতে পারেনি। সেজন্য ছাত্র আন্দোলন ছিল অনুপস্থিত। বিগত সরকার ভাল করে জানতো শিক্ষাংগনকে বিকলাঙ্গ করে রাখতে পারলে গদি নিরাপদ থাকবে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। নতুবা এ আন্দোলনের চিত্র অনেক আগেই ভিন্ন রুপ ধারণ করতো। তাই মাঝে মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি ,গনতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার , নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ আন্দোলন করতে যে সীমাহীন অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। এসব দাবি ছাত্র আন্দোলনে অনুপস্থিত ছিল । কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ যখন সঠিক সময়ে সাহসী দাবি নিয়ে বুক চেতিয়ে পুলিশের বুলেটের সামনে অকাতরে জীবন দিতে লাগলো । তখন কোটা সংস্কার আন্দোলন , জনগণের প্রানের দাবি এক দফার আন্দোলনে রুপান্তরিত হয়। ছাত্র জনতা একাকার হয়ে রাজপথে রক্তদিয়ে গন অভ্যুত্থান সৃষ্টি করে । বিগত দিনের রাজনৈতিক দলগুলো পরিকল্পনা ও সাহসীকতার অভাবের কারণে শেষ ধাক্কা দিতে পারে নাই। সে কারনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব আন্দোলনের চেম্পিয়ানশীপটা দাবি করতে পারেনি। তা হলে অভ্যুত্থানের পরবর্তী চিত্র ভিন্ন হতো । সেই সুযোগ টাই নিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারাও ভাবতে পারেনি এই আন্দোলন এভাবে রুপ লাভ করবে। এই নেতৃত্বের এ রকম অতীত অবিজ্ঞতা ও ছিল না । তাইতো ডি বি ,হারুনের ভাতের হোটেলে নিয়ে ছয় সমন্বয়কে দিয়ে বিবৃতি দিয়ে আন্দোলন নস্যাৎ করার চেষ্টা করে ছিল। কিন্তু গত একযুগ বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা হাওরে , জংগলে, বসবাস রাত্রি যাপন করে দিনাতিপাত করছেন। প্রান দিয়েছেন , কেহবা দেশ ত্যাগ অথবা পংগুত্ব বরন করেছেন। আপনি জুলাই আগষ্টের আন্দোলনের কথা বলে তাদের এই ত্যাগকে ভূলে গেলেন ,বা খাট করে দেখলেন? আপনার জাতি সংঘ অধিবেশনে বক্তৃতায় উল্লেখ করেছন এই আন্দোলনে আটশো নিহত হয়েছেন।আপনার স্বাস্থ্য উপকমিটির তত্ত্বে প্রকাশ ১৫৮১ জন নিহত এবং ১৮৩০ জন আহত । কিন্তু বিগত স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ভোট ও ভাতের অধিকারের সংগ্রামে নিহত হয়েছেন ২৭০০ জনের বেশি । বাকী শহীদের কথা উল্লেখ করা হলো না। এবং গন অভ্যুত্থানের পর জনতার রোষানলে পড়ে ৪৪ জন পুলিশ ও মারা গিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে বেশির ভাগ নিরিহ গরীব সিপাহী। আমরা জানি নিরিহ অনেক সিপাহী চাকরি রক্ষার জন্য অফিসারের হুকুম তামিল করতে বাধ্য। উর্ধতন অফিসার দের চাপের কারনেই অনেক অন্যায় কাজ করেছেন। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে ,এখন পর্যন্ত স্বৈরাচারকে টিকায়ে রাখার জন্য যে সব মূল হোতারা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে। সুতরাং রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিরিহ পুলিশ সহ বিগত দিনে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যারা প্রান দিয়েছেন তাদের সবাইকে সমান চোখে দেখা উচিৎ। শহীদের রক্তের মধ্যে কোন বিভাজন হতে পারে না । নতুবা তাদের আত্মা শান্তি পাবে না। একজন লোক মারা গেলে সে আর কোন কোন দলের থাকেনা। সে তখন জাতির সম্পদ হয়ে যায়। যে মানুষ টি তার সবচেয়ে মূল্যবান জীবন টি জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বিসর্জন দিল ,তার জন্য জাতি এবং রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আপনার সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া উচিৎ। সুতরাং "শহীদ সৃতি জুলাই ফাউন্ডেশনের "মাধ্যমে যে বিভাজনের সৃষ্টি করা হচ্ছে তা খুব ই হতাশা জনক। আপনার মতো আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহনযোগ্য ব্যক্তি এ প্রশ্নে জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত করতে পারেন না।জাতির ঐক্যে এখন খুব ই প্রয়োজন। বিভক্ত জাতি দিয়ে দেশ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না । যে ভাবে সামরিক শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গনতান্ত্রিক আন্দোলনে "নূর হোসেন বুকে পিটে লিখেছেন "স্বৈরাচার নিপাত যাক ,,গনতন্ত্র মুক্তি পাক"। স্বৈরশাসকের পতন হয়েছিল। কিন্তু আমাদের রক্তে ভেজা গনতন্ত্র মুক্তি পায়নি। মীর মুগ্ধ,আবু সাইদ ,নূর হোসেনরা বারবার আমাদের কাছে আসে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সাহস যোগাতে। নব্বুইয়ের গন অভ্যুত্থানে ও এদেশের ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। কিন্তু জাতীয় প্রশ্নে প্রধান বিরোধী দল দ্বীমতের কারনে জাতি বিভক্ত। দেশের অগ্রগতির জন্য সমস্যা এ দিকে ও গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। নতুবা অতীতের মতো এবার ও জাতি হতাশ হবে । ৯০ গন অভ্যুত্থানের পর ছাত্ররা ক্যাম্পাসে ফিরে যায় । তখনকার ছাত্র নেতৃ বৃন্দ ক্ষমতার অংশীদার হয়নি। স্বাধীনতা আন্দোলনে ও ছাত্র সমাজ ছিল মূল চালিকা শক্তি। "জয় বাংলা শ্লোগান ,,বাংলাদেশের পতাকা নির্ধারণ ও আনুষ্ঠানিক ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে উত্তলন , স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ , শেখ মুজিব কে ৬৯ এর গন অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত করে "বংগবন্ধু "উপাধি দেওয়া ছিল ছাত্র আন্দোলনের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস। কিন্ত এবারই প্রথম পাচই আগষ্টের গন অভ্যুত্থানের পর ছাত্র নেতৃত্ব ক্ষমতা র ভাগ নেয়। ছাত্র সমাজ সব সময় ষ্টাবলিষ্ট মেন্টের বিপক্ষে সত্য ,ন্যায়ের পক্ষে জাতির বিবেক হিসেবে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করে । কিন্তু তিন জন ছাত্র ক্ষমতার চেয়ারে বসায় ইতিমধ্যেই তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি ও ভাংগনের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এই আন্দোলনে একক কোন নেতৃত্ব ছিল না। কোন সংবিধান কোন কমিটি কিছু ই ছিল না। কয়েকজন সমন্বয়কের নেতৃত্বে এটা ছিল ছাত্রদের সত:ফুর্ত আন্দোলন। যে কারনে সামান্য কিছু দিনের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ,, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ,, জাহাংগীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একযোগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল সমন্বয়রা পদত্যাগ করেছেন। তাদের বক্তব্য হলো ,,সমন্বয়কের নাম ভাংগিয়ে ছাত্র জনতা রক্তের উপর দিয়ে সমন্বয়রা বিতর্কিত কার্যক্রম ,ব্যক্তি প্রতিষ্ঠা ,এবং প্রভাব খাটিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিলের প্রচেষ্টা হচ্ছে। অতীতের সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের মতো আচরন করছে। যা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চেতনার বিরোধী। ওরা শহীদের রক্তের সাথে প্রতারনা করছে। এই ভেনারের নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের মানুষের অংশ গ্রহনের গন অভ্যুত্থানের ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। আমাদের মূল দাবির আন্দোলন সফল হয়েছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব এই নাম বিলুপ্ত করা উচিৎ । " এমনকি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সার্জিস আলম বলেন ,, আমাদের সহপাঠীরা ক্ষমতা নেওয়ার পর সংগঠনের স্প্রিরিট নষ্ট হয়ে গেছে। তারা কি করছেন আমাদের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ ও হয়না। আমাদের কে ছাত্র জনতা প্রশ্ন করলে আমরা উত্তর দিতে পারিনা। আস্থার জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে। খুব আশাকরে আমরা বিপ্লবের পর আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ড মোহাম্মদ ইউনুস সাহেব কে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছি। তিনি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কিন্তু আশপাশের কয়েকজনের কারণে তিনি ও প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন "।এই তিন ছাত্র উপদেষ্টা এবং আরও কিছু ক্ষমতা লোভী সমন্বয়ক পরিচয়ে চাদাবাজি ,জোরপূর্বক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে পদত্যাগ এবং সাম্প্রতিক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত নূতন উপ উপচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে একদল সমন্বয়ক ছাত্র শপথ বাক্য পাঠ করিছেন। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই প্রতিবাদের কারনে সমন্বয়করা শিক্ষক ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কারন শপথ হচ্ছে আনুষ্ঠানিক প্রতিজ্ঞা। এতে করে সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় ও এধরনের প্রতিষ্ঠানের শপথের ক্ষেত্রে কিছু আইনগত বাধ্যবাদকতা থাকে। শিক্ষকেরা ছাত্রদের নৈতিকতা শিক্ষা দেন। কিন্তু ছাত্ররা যদি শিক্ষকদের নৈতিকতার শপথ পড়ান তখন অস্বাভাবিক লাগে ,তা মেনে নেওয়া যায় না। সমন্বয়ক পরিচয়ে এ সব কর্মকাণ্ডে তাদের আত্মত্যাগের গন অভ্যুত্থানের গৌরবজ্জ্বল ভূমিকাকে প্রশ্নবিধ্য ও ম্লান করে দিচ্ছে।২৩ সেপ্টেম্বর জাতি সংঘ সফরের সময় আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আয়োজিত "ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডার ষ্টেজে"।আপনার বিশেষ সহকারী (উপদেষ্টা) মাহফুজ আলম কে এই আন্দোলনের "মাষ্টার মাইন্ড " বলে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এ নিয়ে দেশে বিদেশে সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খোদ আপনার ছাত্র উপদেষ্টা সমন্বয়ক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নাহিদ ইসলাম দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন ," জুলাই বিপ্লবের পিছনে একক কোন নেতৃত্ব ছিল না। আমরা কয়েকজন সমন্বয়কের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করেছি। এখানে সমস্ত কৃতিত্ব ছাত্র জনতার। সাধারণ মানুষ অগ্রসর হয়ে আন্দোলনকে সফল করেছে। এখানে কোন মাষ্টার মাইন্ড বা একক কোন কৃতিত্ব নেই"।সুতরাং মাদ্রাসা পড়ুয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছ'বছরের ল' ক্লাসের ছাত্রকে এভাবে তুলে ধরলেন। যে কারনে এত বড় গন অভ্যুত্থানের ভূল বার্তা বিশ্বের কাছে গেল । এবং নিজেদের মধ্যে ও বিতর্কের সৃষ্টি করলেন।আরেকজন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে টাইমস ম্যাগাজিনে বছরের বিশ্বের প্রভাব শালী একশত জনের একজন হিসেবে নির্বাচিত করে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক ভিত্তি ই এখনো নড়েচড়ে বিদেশিরা তাদের সম্পর্কে এইসব খবর কোথায় থেকে পায় ? দেশ বিদেশে তাদেরকে নিয়ে এত দৌড়েঝাপ ,আলোচনা জনগণের মনে প্রশ্নের উদ্ধেগ সৃষ্টি হচ্ছে । এদের হাতে আমাদের দেশ কি নিরাপদ ? এবং দিন যত যাচ্ছে এই সমন্বয়কের ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য ও তাদের আসল পরিচয় বেরিয়ে আসছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫২ জন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মধ্যে ১০৮ জন ছাত্র শিবিরের কর্মী। একই ভাবে জানা গেল আওয়ামী ছাত্র লীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ,সম্পাদক শিবির। ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০১ সদস্যর মধ্যে শিবিরের পূর্নাঙ্গ সদস্য ৪৫,সাথী ছিল ৩০ কর্মী ছিল ৮০ ,সর্বমোট ১৫৫ জন শিবির কর্মী অর্থাৎ মেজরিটি। আপনার উপদেষ্টাদের এখনো রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি। কোন রাজনৈতিক দলের বা আদর্শে বিশ্বাস করেন ? আমাদের এ অঞ্চলে বেশ কিছু নিষিদ্ধ জংগী সংগঠন আছে। যারা এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এধরনের লোকজনের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা একান্ত জরুরী।যে কোন লোক গনতান্ত্রিক ,আদর্শিক চর্চা করতে পারে । তা আদর্শিক ভাবে ই মোকাবিলা করা উচিৎ। এটা গনতন্ত্রের সৌন্দর্য । কিন্তু এভাবে পরিচয় লুকিয়ে অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম (বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন )নেতৃত্ব দেওয়া ,বা অন্য আরেকটি ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে চলে আসা ,কতটুকু নীতি ও নৈতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য ? এখন সারা দেশে ছাত্রলীগের বিগত দিনের কুকর্মের জন্য গ্রেফতার ও বিচারের দাবি উঠছে। এরা কি গ্রেফতার ও বিচারের আওতার বাইরে থাকবে? রাজনীতির অংগনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য এই সব প্রশ্নের উত্তর তাদের দিতে হবে । এরা তো সমাজের কোন পোড় খাওয়া নেতা ব কর্মী নয়। এদের হাতে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কতটুকু নিরাপদ ? এদের মধ্যেমে আমাদের দেশ বা দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোতে বিদেশি কোন চক্র নূতন কোন পরিকল্পনা করছে কি? হটাৎ করে কোন নেতৃত্ব বা দলের উত্তান জনগণকে ভাবিয়ে তোলে। আমরা চাই তরুন প্রজন্ম সমাজ ও রাজনীতিতে বেশি করে যোগদান করে নূতন মেধা ও তারুণ্য দিয়ে দেশ জাতিকে অগ্রসর করে নিয়ে যাক। যে ভাবে অতীতে ছাত্র নেতৃবৃন্দ জাতির জন্য ত্যাগ স্বীকার করে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতা হিসেবে সমাজে অবদান রাখছেন।রাজনৈতিক ,আদর্শিক ,বা সাংগঠনিক পরিচয় গোপন রেখে একেক সময় একেক রুপে জনগণের সামনে হাজির হলে তা হবে ভংকর। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বিশ্ব নন্দিত ব্যক্তিত্ব ,ড মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে নূতন প্রজন্ম ও পুরানোদের নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ দেশ ও জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সকল সংস্কার শেষ করবেন। এবং দেশী বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবেলা করে মানুষের কাংখিত ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করনের লক্ষ্যে দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন