রোগ-ব্যাধির কারখানা কামরাঙ্গীরচরের কয়লা ঘাট

সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা | 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত কামরাঙ্গীরচরের ঐতিহাসিক কয়লা ঘাট এলাকা। এই এলাকায় হাজার হাজার লোকের বসবাস। কয়লা ঘাট বেড়ীবাঁধ জুড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারনে রোগ-ব্যাধির কারখানায় পরিনত হয়েছে পুরো এলাকাটি।

আজ সোমবার (২২ অক্টোবর) সকালে কয়লা ঘাট এলাকার বাড়ীওয়ালা ও স্থানিয় বাসিন্দারা ময়লা-আবর্জনার স্তুপ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার দাবিতে ব্যাপক মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করেন। এই মানব্বন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন এলাকার বাড়ীওয়ালা, স্থানিয় বাসিন্দা এবং মাদরাসার সাধারন শিক্ষার্থীরা। কয়লা ঘাট বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন আবর্জনার ভাগাড়ের দুই পাশে দাড়িয়ে মানবন্ধন কর্মসূচীটি পালন করেন।

স্থানিয় একজন মুরুব্বী সংক্ষিপ্ত বক্তবে বলেন, " আমরা এখানে আজ মানব্বন্ধন করছি আমাদের একটি দাবী নিয়ে। আজ থেকে প্রায় ১৪/১৫ বছর যাবত রাস্তার মধ্যে বেআইনি ভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। যার কারনে অত্ত্র এলাকার বাড়ীওয়ালা-ভাড়াটিয়া ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লোকজন দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ডেঙ্গুর যে প্রভাব সেটা আরও কঠিন আকার ধারন করছে। আমাদের দাবী অতিদ্রুত আমাদেরকে এই দুর্বিষহ জীবনযাপন থেকে মুক্তি দেয়া হোক।"

স্থানিয় বাড়ীওয়ালা মুর্তজা কামাল বলেন, " আমরা কামরাঙ্গীরচরবাসী  ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ীওয়ালা-ভাড়াটিয়া এবং সাধারন জনগন একত্রিত হয়েছি আজকের এই মানব্বন্ধনে। আপনারা জানেন গত ১৫/১৬ বছর যাবত এই উন্মুক্ত স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে কিন্তু আমরা বহুবার চেষ্টা করেছিলাম এখান থেকে সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য। এরজন্য অনেক তৎবিরও করেছিলাম। এখন পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেহেতু এটা একটা উন্মুক্ত পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের বিপরিতে সেহেতু আমরা চাই এই দুর্ভোগ মুক্তি পেতে।"

এদিকে, এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আবর্জনার দুর্গন্ধে। দুর্গন্ধের কারণে রাস্তায় হাঁটাও যায় না। করপোরেশনের কর্মীরা বাসাবাড়ির আবর্জনা নিয়ে গিয়ে ফেলছে নদীর তীরে। এলাকায় বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। অনেকে রাতের আঁধারে কলকারখানার বর্জ্য ফেলে যায়। বাড়ির মালিকেরা নদীর তীরে ময়লা ফেলা রোধ করতে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন, কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। বাঁশের বেড়ার ওপর দিয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে। ফলে দুর্গন্ধে টেকা যায় না এবং মশা-মাছির কারণে ঘরেও থাকা দায়।’জনজীবনে এর ক্ষতিকর প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়ছে। এলাকায় বেশিরভাগ মানুষই পরিবেশদূষণের কারণে সৃষ্ট হওয়া রোগে আক্রান্ত। ময়লা ফেলা রোধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবি­উটিএ) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নজরদারি দরকার। বিষয়টি অতীব জরুরি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন