পাঁচ বছর পর ব্রিকসের মঞ্চে মোদি-শি বৈঠক

রাশিয়ার কাজানে শুরু হয়েছে ব্রিকস বৈঠক। সেখানে মূল বৈঠকের ফাঁকে ইতিমধ্যেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। এ ছাড়াও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। জুলাইয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন মাসুদ।

তারপর এই প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হলো। তবে কূটনৈতিক মহলের চোখ এখন ভারত-চীন বৈঠকের দিকে।

 

মোদি-পুতিন বৈঠক

মঙ্গলবারই পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে মোদির। আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ।

উল্লেখ্য, এর আগেও মোদি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চেয়েছিলেন। এবং সে কারণে গত এক বছরে তিনি একাধিকবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও।

 

এদিনের বৈঠকেও মোদি ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা বলেছেন পুতিনকে এবং প্রয়োজনে ভারত সবরকমভাবে মধ্যস্থতা করতে রাজি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

এ ছাড়াও ভারত-রাশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্ক নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে দুইপক্ষের। দুই দেশ একইরকমভাবে সহযোগিতাপূর্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে বলে ঠিক হয়েছে। ব্রিকস সম্মেলন সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করার জন্য পুটিনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদি।

 

মাসুদের সঙ্গে বৈঠক

ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোদির বৈঠকের দিকে অনেকেরই চোখ ছিল। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়েছে।

ইসরায়েলে সরাসরি আক্রমণ চালিয়েছে ইরান। এই পরিস্থিতিতে মোদি মাসুদকে জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছে ভারত। এক্ষেত্রেও ভারত শান্তিপূর্ণ মধ্যস্থতা করতে রাজি। শান্তিপূর্ণ সমাধানসূত্র খুঁজে বার করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন মোদি।

 

বৈঠকের পর ইরানের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বেই ভারত একটি বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। সব দেশের সঙ্গেই তার ভালো সম্পর্ক। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ।

চাবাহার বন্দর এবং আইএনএসটি প্রকল্প

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধান দুই দেশের সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেন। আলোচনায় উঠে আসে চাবাহার বন্দরের প্রসঙ্গ। ভারতের সঙ্গে এই বন্দরের প্রকল্প হওয়ার কথা ইরানে। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোর (আইএনএসটি) নিয়েও মোদি এবং মাসুদের মধ্যে কথা হয়েছে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইরানে বসবাসকারি ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন মোদি।

আজ বুধবার ব্রিকসের মঞ্চে মোদি এবং চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি চিন পিংয়ে বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকের আগে ভারত এবং চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির কথা ঘোষণা করেছে। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। সীমান্তে উত্তেজনা প্রবল ছিল। 

মঙ্গলবারই দুই দেশ জানিয়েছে, সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের চুক্তি হয়েছে তারা। সীমান্ত থেকে অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে নিচ্ছে দুই দেশ। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের আগে সীমান্তে যে পরিস্থিতি ছিল, সেই পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া হবে, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার বৈঠকের আগে চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত-চীন সুসম্পর্ক ভূরাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন এ বিষয়ে সদর্থক। সীমান্ত নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, তাকে তারা স্বাগত জানিয়েছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, কূটনৈতিকভাবে শি-মোদি বৈঠকের মঞ্চ তৈরি। পাঁচ বছর পর মোদির সঙ্গে শিয়ের এই বৈঠক হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন