শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি ,,
বিএনপির কেন্দ্রীয় নিবার্হী কমিটির সদস্য মুজিবসহ দলের নেতাকর্মীদের হত্যাচেষ্টা ও ককটেল বিস্ফোরক মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রীসহ আসামি অর্ধশতাধিক আ'লীগ নেতাকর্মী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের সাতবারের সংসদ সদস্য সাবেক চিফ হুইপ মো. আব্দুস শহীদকে প্রধান আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা সংখ্যা দাঁড়ালো চারটি।
শ্রীমঙ্গল থানায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৫৫জন নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করে এ মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির অঙ্গ সংগঠন শ্রীমঙ্গল উপজেলার ২নং ভুনবীর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মো. আব্দুল আহাদ।
মামলার বাদি মো. আব্দুল আহাদ শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের আলীসারকুল গ্রামের মো. মাক্কু মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাতে (২৪ অক্টোবর) ভুনবীর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল আহাদ শ্রীমঙ্গল থানায় এ মামলাটি দাখিল করলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম মামলাটি ১৪৩/৩২৩/৩০৭/৪২৭/১১৪/ ৫০৬ (২) পেনাল কোড তৎসহ বিস্ফোরক (ককটেল)পদার্থ আইন ১৯০৮, ৩১৪ ধারায় রেকর্ড করে থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোবারক হোসেন খানকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। শ্রীমঙ্গল থানার মামলা নং-২৪।
এ মামলায় সাতবারের এমপি মো. আব্দুস শহীদ ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভানু লাল রায়, এনাম হোসেন চৌধুরী মামুন, মোঃ ছালিক আহমেদ, বেলায়েত, শ্রীমঙ্গল সকল সিন্ডিকেটের হোতা জহুর তরফদার, সাবেক কৃষি মন্ত্রীর ভাই মোছাদ্দেক হোসেন মানিক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল এবং রহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব বেভুল, শাহজাহান মিয়া, রাজঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জী, মো. আব্দুস শহিদ, মো. মোশাহিদ মিয়া, মোঃ ফরিদ মিয়া, আশ্রিদ্রোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রণেন্দ্র প্রসাদ বর্ধন, হেলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জগৎজ্যোতি ধর শুভ্র, যুবলীগ নেতা ছুরুক মিয়া, যুবলীগ নেতা নুরুল আমিন, ড্রাইভার ময়না মিয়া, জসিম উদ্দীন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা নবারুন দাশ (রিপন), কথিত সুশীল সমাজের নেতা বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক অবিনাশ আচার্য্য, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ, আবু তালেব বাদশা, আবেদ হোসেন, নাসির মিয়া, সুজাত মিয়া, বেলাল আহমেদ, শ্রীপদ দেব, এ বি বেলাল, প্রাণেশ গোয়ালা, মামুন মিয়া, মো. ফুল মিয়া মহালদার, নাহিদ মিয়া, সোহেল মিয়া, আকবর হোসেন শাহিন, আকাশ দেব জুয়েল, রাশেদ তালুকদার, কাছুম মিয়া, ফারুক আহমেদ চৌধুরী বাপ্পি, মো. লিমন মেম্বার, রুহেল মিয়া, ইকরাম হোসেন সোহাগ, কুটি মিয়া, জুয়েল, হাবিব মেম্বার, জলিল মিয়া, বিপ্লব দাশ, বদরুল আলম শিপলু, জুয়েল, আব্দুল বাছিত আলাই, সুশীল শীল, মজলিশ মিয়া।
এছাড়া এ মামলা অজ্ঞাতনামা আরও ১০০/১৫০ জন আসামি করা হয়েছে।মামলার এজাহারে বাদি আব্দুল আহাদ অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এ মামলার ১নং স্বাক্ষী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানছড়া প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-৪ আসনে (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার এবং সরকার সমর্থক ফ্যাসিবাদীর মদদপুষ্ঠ কর্মী, সমর্থক ও প্রশাসন দ্বারা হামলা, মামলা, গুম, নির্যাতন ইত্যাদি করে দিনের ভোট রাতে এবং কেন্দ্র দখল করে নির্বাচন সম্পন্ন করে ১নং আসামী আব্দুস শহীদকে বিজয় ঘোষণা করেন। নির্বাচন প্রচার প্রচারণা চলাকালীন সময়ে বিএনপি প্রার্থীসহ কর্মী-সমর্থককে প্রতিনিয়ত হুমকি, ধামকি, হামলা, মামলা, নির্যাতন ইত্যাদি করে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে সন্ধা আনুমানিক ৬টার সময় উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের ভুজপুর বাজারে ১নং স্বাক্ষীর নির্বাচনী পথসভা চলাকালীন সময়ে ১/২ নং আসামীর নির্দেশে ১-৫৫ নং আসামীগণসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ দা, লাঠি, রড, ককটেল, ইত্যাদি নিয়ে আমাদের পথসভা ঘেরাওপূর্বক এলোপাথারি মারপিটসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। একপর্যায়ে কতেক আসামীগণ ১নং সাক্ষীকে খুন করার উদ্দেশ্যে আঘাত করার জন্য এগিয়ে আসলে আমিসহ সাক্ষীগণ ১নং সাক্ষীকে ঘেরাও করে প্রাণে রক্ষা করি। তখন আসামীগণের এলোপাথারি আঘাতে আমিসহ সাক্ষীগণ আঘাতপ্রাপ্ত হই। তখন কতেক আসামীগণ ১নং সাক্ষীর ব্যবহৃত SI নোয়া গাড়ী ভাঙচুর করেে অনুমান তিন লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধণ করে। আসামীগণ ঘটনাস্থলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম পূর্বক এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আমরা প্রাণের ভয়ে দ্বিকবিদ্বিক ছুটে যেয়ে আমাদের প্রাণরক্ষা করি। ঘটনার পর ফ্যাসিবাদী সরকারের কাছে আমাদের জানের নিরাপত্তা না থাকায় এবং পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় মামলা দায়ের করতে পারিনি। বর্তমানে জনগণের সরকার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এ মামলা দায়ের করলাম। মামলায় ১০জন স্ব্বাক্ষীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন