ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট আকাশ হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা ও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই শনিবার ভোররাত থেকে রাজধানী তেহরান এবং তার আশপাশের এলাকাগুলো মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ইরানের সামরিক, ক্ষেপণাস্ত্র সাইটগুলোতে হামলা শেষ করেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কিছুক্ষণ আগে আইডিএফ ইরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট এবং লক্ষ্যবস্তুতে হামলা সম্পন্ন করেছে। হামলা শেষে আমাদের বিমানগুলো নিরাপদে বাড়ি ফিরেছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল রাষ্ট্র ও এর নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইরানি শাসকগোষ্ঠীর হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালানো হয়। প্রতিশোধমূলক এই হামলা সম্পন্ন হয়েছে এবং মিশন পূর্ণ হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, আইএএফ বিমান ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কেন্দ্রগুলোতে আঘাত করে।
গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তেহরান। তার জবাব দিতে ইসরায়েল পাল্টা হামলা করবে এমন আশঙ্কা ছিল আন্তর্জাতিক ও মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। সেই আশঙ্কা সত্য হলো।
আইডিএফের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলা পরিচালনা করছে আইডিএফের বিমানবাহিনী।
হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের অপারেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নিলফোরুশান নিহত হওয়ার পর ইরান ওই হামলা চালিয়েছিল।
হামলা শুরুর পর আইডিএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে গত বেশ কয়েক মাস ধরে ইরানের ক্ষমতাসীন এবং তাদের অনুগত গোষ্ঠীগুলো যেভাবে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তার জবাব দিতেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি, কারণ আমাদের দায়িত্ব ইসরায়েলকে রক্ষা করা।’
ইরান গত বছর ইসরায়েলে ক্ষেণাস্ত্র ছুড়েছিল।
এখানে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রলোই ব্যবহৃত হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েল রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সরাসরি এবং তাৎক্ষণিক হুমকির সৃষ্টি করেছে। ইরান এপ্রিল এবং অক্টোবরে দুটি হামলার সময় সরাসরি ইসরায়েল রাষ্ট্রের দিকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করে সেগুলো ভূপাতিত করেছে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। পেন্টাগন জানিয়েছে, এই হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়। হোয়াইট হাউস এই হামলাকে ‘আত্মরক্ষার মহড়া’ বলে বর্ণনা করেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের দাবি, আকস্মিক এই হামলা জনগণের মধ্যে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। সাধারণ লোকজনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গণমাধ্যমে।
তেহরানের প্রধান বিমানবন্দর ইমাম খোমেনি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল। সেখানে দেখানো হয়েছে, সাধারণ যাত্রীরা অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে বিমানবন্দরে চলাচল করছেন।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন