১৪০ বছর আগে ফাঁসিতে ঝোলা ব্যক্তিদের প্রেসিডেন্টের ক্ষমা

আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগিনস ১৪০ বছরেরও বেশি আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে মরণোত্তর ক্ষমা করেছেন। সিলভেস্টার পফ (৩৫) ও জেমস ব্যারেটের (২১) জন্য বুধবার ক্ষমা স্বাক্ষর করেন তিনি, যাদের ১৮৮২ সালে কেরি কাউন্টিতে টমাস ব্রাউন হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

প্রেসিডেন্টের বাসভবনে পফ ও ব্যারেটের বংশধরদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে আইরিশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা যা ঘটেছে তা পরিবর্তন করতে পারি না। তবে আমরা স্বীকার করতে পারি, সিলভেস্টার পফ ও জেমস ব্যারেটের সঙ্গে যা ঘটেছিল, তা এক বড় অন্যায় ছিল।

 

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আনন্দিত, আজ আমি তাদের প্রত্যেককে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমা প্রদান করতে পারছি এবং অন্তত ইতিহাসে কিছুটা সঠিকতা ফিরিয়ে আনতে পারছি। আশা করি, প্রায় ১৪২ বছর পর এই ক্ষমা তাদের পরিবারের জন্য কিছুটা হলেও শান্তি বয়ে আনবে।’

‘অসন্তোষজনক’ সাজার রায়
পফ ও ব্যারেট ছিলেন চাচাতো ভাই। তাদের ১৮৮৩ সালের জানুয়ারিতে ট্রালি জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়।

এর তিন মাস আগে ড্রোমালটন এলাকায় টমাস ব্রাউনের খামারে হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

 

২০২৪ সালের এপ্রিলে এক বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনার পর বিচার বিভাগ তাদের মরণোত্তর প্রেসিডেন্টের ক্ষমা দেওয়ার সুপারিশ করেন।

পর্যালোচনাকারী ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের আইন বিশেষজ্ঞ ড. নিয়াম হাওলিন তার প্রতিবেদনে দেখান, রায়টি ‘অসন্তোষজনক’ এবং 
ঊনবিংশ শতকের আশির দশকের মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিহীন। তিনি বলেন, আধুনিক কোনো আদালত সেই সময়ের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করতেন না।

 

স্কার্টাগলিন গ্রামের কাছে ড্রোমালটনের এক খেতে কাজ করার সময় ব্রাউন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এক প্রতিবেশী দুজন কালো কোট পরিহিত ব্যক্তিকে খেতে প্রবেশ করতে দেখেন এবং এরপর ব্রাউনের ওপর কয়েকবার গুলি চালানো হয়। যদিও আক্রমণকারীদের বর্ণনার সঙ্গে পফ ও ব্যারেটের মিল নেই, কিন্তু তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং প্রতিবেশীর বিবৃতির পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে প্রথম বিচারক দল কোনো সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে পারায় তাদের কর্ক কাউন্টিতে দুটি বিশেষ বিচারক দলের সামনে বিচার করা হয়। দ্বিতীয় বিচারক দলের রায় অনুযায়ী তারা দোষী সাব্যস্ত হন এবং লর্ড লেফটেন্যান্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা সত্ত্বেও তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

 

‘খুবই বিরল ঘটনা’
স্থানীয় ইতিহাসবিদ মাইকেল ও’ডোনোহিউ প্রথম এই ঘটনা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন, যখন তিনি ট্রালি লাইব্রেরিতে পফ ও ব্যারেটের কাহিনি খুঁজে পান। ২০০৮ সালে ও’ডোনোহিউর মৃত্যুর পর তার গবেষণার নথিপত্র সংরক্ষণে রাখা হয়। ২০১৪ সালে ক্যাসলিসল্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট হেরিটেজ গ্রুপের জনি রোচ ও জ্যানেট মারফি তার কাজটি হাতে নিয়ে গবেষণাটি আরো এগিয়ে নিয়ে যান এবং একটি ক্ষমা সম্ভব বলে উপলব্ধি করেন।

আইরিশ রাষ্ট্রের ইতিহাসে মরণোত্তর প্রেসিডেন্টের ক্ষমা অত্যন্ত বিরল ঘটনা এবং এটি চতুর্থবারের মতো কোনো ঐতিহাসিক সাজার রায় বাতিল করা হলো।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন