শর্ত ‘উপযুক্ত’ হলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবেন হিজবুল্লাহপ্রধান

লেবাননের শক্তিশালী সামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নতুন নেতা নাইম কাসেম বুধবার বলেছেন, তার গোষ্ঠী ইসরায়েলের সঙ্গে গ্রহণযোগ্য শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর চুক্তি প্রস্তাবিত হয়নি।

এর আগে হিজবুল্লাহর মহাসচিব হিসেবে মঙ্গলবার নিয়োগপ্রাপ্ত হন কাসেম। গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম বক্তৃতা এটি।

পূর্বে রেকর্ডকৃত এ বক্তৃতায় তিনি সরাসরি লেবাননে যুদ্ধবিরতিকে গাজায় যুদ্ধের অবসানের সঙ্গে যুক্ত করেননি, যা ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীর পূর্বের অবস্থান ছিল।

 

নতুন হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, ‘যদি ইসরায়েলিরা আক্রমণ বন্ধ করতে চায়, আমরা সেটি মেনে নিতে পারি, তবে আমাদের উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য শর্তের ভিত্তিতে।’


 

তবে হিজবুল্লাহ ‘যুদ্ধবিরতির জন্য অনুনয় করবে না’ জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো চুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা এখনো ফলপ্রসূ হয়নি।

তিনি আরো বলেন, ‘এমন কোনো প্রকল্প প্রস্তাবিত হয়নি, যা ইসরায়েল মেনে নেবে এবং আমরা আলোচনা করতে পারব।

 

নাইম কাসেম ৩০ বছর হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব দেওয়া হাসান নাসরাল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, যাকে ইসরায়েল ২৭ সেপ্টেম্বর হত্যা করেছে। তিনি এমন সময় হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যখন এই গোষ্ঠী ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। ইসরায়েল গত মাসে হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে হামলা বাড়িয়েছে এবং সীমান্তে স্থল বাহিনী পাঠিয়েছে।

হিজবুল্লাহ ‘দিন, সপ্তাহ ও মাস’ ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সক্ষম উল্লেখ করে হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, ‘আমাদের ভূখণ্ড থেকে বেরিয়ে যাও, যাতে তোমাদের ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।

যদি থাকো, তাহলে জীবনে এর চেয়ে বেশি মূল্য দিতে হবে।’

 

একই সঙ্গে নাইম কাসেম স্বীকার করেন, ইসরায়েল নাসরাল্লাহ ও হিজবুল্লাহর অন্য শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে গোষ্ঠীটিকে ‘বেদনাদায়ক’ আঘাত করেছে। তবে তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ ‘শূন্যস্থান পূরণ, বিকল্প নেতাদের নিয়োগ এবং সব কিছু সংগঠিত করে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’

এ ছাড়া কাসেম প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি তার পূর্বসূরির নির্ধারিত যুদ্ধকৌশল অনুসরণ করবেন। তিনি বলেন, ‘আমার কর্মসূচি আমাদের নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহর কর্মসূচির ধারাবাহিকতা।

 

অন্যদিকে ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে আলোচনা করছে। ইসরায়েলের সরকারি রেডিওকে তিনি বলেন, ‘আলোচনাগুলো চলছে, তবে এতে সময় লাগবে।’

এ ছাড়া ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ টেলিভিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার সঙ্গে একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরায়েলের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে লিতানি নদীর উত্তরে হিজবুল্লাহর সরে যাওয়া, সীমান্তে লেবাননের সেনাবাহিনীর মোতায়েন, যুদ্ধবিরতি প্রয়োগে একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা এবং হুমকি থাকলে ইসরায়েলের স্বাধীন পদক্ষেপ নিশ্চিতকরণ।

 

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্ক ও বিশেষ দূত আমোস হকস্টেইন বুধবার ইসরায়েলে যাচ্ছেন। তারা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্তাবলির বিষয়ে নেতানিয়াহু ও অন্য ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

 

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন