ইতালি থেকে আলবেনিয়ায় এবার ৮ বাংলাদেশি-মিসরীয়

নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে অনিয়মিত অভিবাসীদের দ্বিতীয় একটি দলকে আলবেনিয়া পাঠিয়েছে ইতালি। দলটিতে বাংলাদেশ ও মিসরীয় আট অভিবাসী রয়েছেন। শুক্রবার অভিবাসীদের বহনকারী জাহাজটি আলবেনিয়ার শেনজিন বন্দরে পৌঁছয়।

এই আট অভিবাসী উত্তর আফ্রিকা থেকে নৌকায় করে ইতালিতে পৌঁছেছিলেন।

ইতালীয় নৌবাহিনীর জাহাজ কয়েক দিন আগে তাদের সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় এই আটজনের মধ্যে একজনকে শনিবার ইতালিতে ফেরত আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বার্তা সংস্থা আনসা।

 

বাকিদের আশ্রয় আবেদন এখন প্রক্রিয়া করা হবে আলবেনিয়াতে। তারা ইতালিতে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না কি নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে, তা নির্ধারিত হবে বলকান অঞ্চলের দেশটিতেই।

 


 

কেন আলবেনিয়ায়?
ইউরোপ মহাদেশে অবস্থান হলেও আলবেনিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত নয়। নতুন স্কিমের অংশ হিসেবে ইতালি অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য দেশটির সঙ্গে চুক্তি করেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আলবেনিয়ার দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে মাসে তিন হাজার অভিবাসীর আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া করা হবে।

সরকার জানিয়েছে, যাদের আশ্রয় আবেদন গৃহীত হবে তাদের ইতালিতে ফেরত আনা হবে।

আর প্রত্যাখ্যাতদের আলবেনিয়া থেকেই নিজ দেশ ডিপোর্ট বা প্রত্যাবাসন করা হবে।

 


 

এই স্কিমের অংশ হিসেবে অভিবাসীদের দ্বিতীয় এই দলটিকে আলবেনিয়ায় পাঠিয়েছে রোম। ইইউ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ইতালিই প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়, এমন তৃতীয় রাষ্ট্রে অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে, যার বিরোধিতা করে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

আফ্রিকার উত্তর উপকূলগুলো থেকে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে প্রতিবছরই অনেক অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছনোর চেষ্টা করে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর এই সংখ্যা ৬০ শতাংশ কমেছে।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৭৬৭ জন সমুদ্রপথে দেশটিতে প্রবেশ করেছে।

 

ইতালির ডানপন্থী জর্জিয়া মেলোনির সরকার অনিয়মিত অভিবাসন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। গত বছরের শেষ দিকে আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াকরণে একটি চুক্তিতে সই করে ইতালি ও আলেবনিয়া সরকার।

ইতালির এই স্কিমের দিকে নজর রাখছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য সরকারগুলোও। ইতালি সফল হলে আরো সদস্য দেশ এই পথে হাঁটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


 

আদালতের সঙ্গে বিরোধ
এদিকে ইতালি সরকারের এই স্কিম বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন আদালত। অক্টোবরে প্রথমবারের মতো ১০ বাংলাদেশি ও ছয় মিসরীয়কে উদ্ধারের পর আলবেনিয়ার শেনজিন বন্দরের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু দেশটির আদালত এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রায় দেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ বা মিসর নিরাপদ দেশের তালিকাভুক্ত না হওয়ায় তাদের ফেরত আনার নির্দেশও দেন বিচারকরা। যে কারণে তিন দিনের মাথায় ওই অভিবাসীদের ইতালিতে ফেরত আনতে বাধ্য হয় সরকার। 

আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ২১ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে নতুন ডিক্রি জারি করে মেলোনি সরকার। এ বছরের জুনে সরকার ঘোষিত ১৯টি নিরাপদ দেশের তালিকাকে আইনে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার মধ্যে মিসর ও বাংলাদেশকেও রাখা হয়েছে।

কিন্তু এই ডিক্রি পরীক্ষা করে দেখতে ইউরোপীয় বিচার আদালতকে অনুরোধ জানিয়েছেন বোলোনিয়ার আদালত।

অন্যদিকে প্রথম রুলের পর ইতালির প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন আদালতের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া উপপ্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি বিচারকদের ‘কমিউনিস্ট’ বলে অভিহিত করেন। সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য হুমকির মুখে বলেও অভিযোগ করেছে বিরোধীরা।

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন