ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট সতর্ক অপেক্ষায় জাতিসংঘ

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাওয়া ট্রাম্পকে নিয়ে কী ভাবছে জাতিসংঘ? প্রথমবার ক্ষমতায় এসে বিশ্বের বেশ কয়েকটি সংস্থা ও চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জাতিসংঘে বাৎসরিক চাঁদা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বোঝা—এমন কথাও বলেছিলেন।

এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি জাতিসংঘসহ বিশ্ব রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কার্যক্রম থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়ে গেলে তা চীনের জন্য নিজেকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থিত করার সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।      

 

অন্যদিকে ১৯৩টি দেশের জোট জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলছেন, ‘এক ধরনের উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, তো আছেই।’ প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পর্ক বিবেচনায় নিয়েই হয়তো এমন কথা বলছনে তিনি।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন।

সংস্থাটিতে সবচেয়ে বেশি আর্থিক অবদান যুক্তরাষ্ট্রের। জাতিসংঘের মূল বাজেটে ২২ ভাগ অবদানের পাশাপাশি আর শান্তি রক্ষা মিশনের খরচের ২৭ ভাগ প্রদান করে দেশটি।

 


 

‘খুব কঠিন দিন’
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতি ও সহায়তা খাতের বাজেট এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে সর্বশেষ ক্ষমতায় এসেছিলেন ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের বাজেট ব্যপক মাত্রায় কমিয়ে আনা।

যদিও এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ট্রাম্পকে চাপে রেখেছিল কংগ্রেস।  

 

জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের পরিচালক রিচার্ড গোয়ান জানান, জাতিসংঘ দপ্তর জানতে, ট্রাম্প আবার ফিরে আসতে পারে। আর তাই যুক্তারাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাজেট কমানোর পরিস্থিতি সামলাতে এক ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘আর তাই, আন্তোনিও গুতেরেস (জাতিসংঘের মহাসচিব) ও তার দল অপ্রস্তুত নয়। তবে তারা জানেন, আগামী দিনগুলো খুব কঠিন হতে পারে।

 


 

এদিকে ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতিসংঘ বিষয়ে তাদের নীতি কী হবে তা নিয়ে ট্রাম্পের দলের কেউ কোনো মন্তব্য করেনি। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের খরচের একটি অন্যায্য ব্যয় বহন করছে।’ ওই সময় তিনি এর সংস্কারের দাবিও জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর ২০২১ সালে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের বকেয়ার পরিমাণ ছিল মূল বাজেটে ৬০০ মিলিয়ন ও শান্তি রক্ষা মিশনে দুই বিলিয়ন ডলার। অবশ্য জো বাইডেন প্রশাসনও দেনার দায়ে আটেক আছে। এখন পর্যন্ত বাইডেনের প্রশাসনের দেনা মূল বাজেটে ৯৯৫ মিলিয়ন ও শান্তি রক্ষা মিশনে ৮৬২ মিলিয়ন ডরার।

গুতেরেসর মুখপাত্র স্টেফান ডয়ারিক বলেন, ‘কোনো নীতি নেওয়া হতে পারে বা না-ও হতে পারে—এমন কোনো বিষয়ে আমরা কথা বলতে চাই না। তবে সদস্য রাষ্ট্রেগুলোর সঙ্গে ওভাবেই কাজ করি, যা আমরা সব সময় করে আসছি।’


 

‘চীনের জন্য সুসংবাদ’
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘ট্রাম্পের জয় চীনের জন্য একটি বিশাল খবর।’ ট্রাম্পের প্রথম আমলে জাতিসংঘে চীনের প্রভাবের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি তখন ছিল চীনের জন্য একটি খোলা বার।’


 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কূটনীতিক আরো বলেন, ‘ট্রাম্প যদি জাতিসংঘের আর্থিক অনুদান কমিয়ে দেয় এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলো থেকে সরে আসে, তাহলে এটি বহুজাতিকতাবাদের সমর্থক হিসেবে নিজেকে উপস্থিত করতে চীনের জন্য একটি বড় সুযোগ হবে।’

জিবি নিউজ24ডেস্ক//

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন