এএসপি আনিসুল হত্যা মামলায় জামিন পেলেন চিকিৎসক মামুন

gbn

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল এ আদেশ দেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান মণ্ডল। তিনি বলেন, চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী রোববার আদালতে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।

 

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার আবদুল্লাহ আল মামুনকে দুদিন ও আদাবরের মাইন্ড এইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যাডিকশনের অন্যতম মালিক ফাতেমা আক্তারকে চার দিনের রিমান্ড শেষে গত শুক্রবার ঢাকার সিএমএম আদালতে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। ১৫ নভেম্বর ফাতেমা আক্তারের চার দিন এবং ১৭ নভেম্বর আবদুল্লাহ আল মামুনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মানসিক সমস্যায় ভুগে আদাবরে মাইন্ড এইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড অ্যাডিকশন নামের বেসরকারি হাসপাতালে ৯ নভেম্বর ভর্তি হন পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম। তার পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরপর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে মারধর করে হত্যা করেন। মারধরের সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে মাইন্ড এইড হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় রাজধানীর আদাবর থানায় আনিসুল করিম শিপনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন- মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক মুহাম্মাদ নিয়াজ মোর্শেদ, মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ, মোছা. ফাতেমা খাতুন ময়না ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন। এঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া মো. সাখাওয়াত হোসেন ও সাজ্জাদ আমিন নামে দুই আসামি পলাতক আছেন।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছেন, আনিসুল করিমকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। মাইন্ড এইডে মারধরে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল অচেতন হয়ে পড়লে মামুন সেই হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং আনিসুলকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নিয়ে যান।

আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর দুদিন আগে গ্রেপ্তার করা হয় মাইন্ড এইডের অন্যতম মালিক ফাতেমা আক্তারকে।

অভিযোগ উঠেছে, যেসব চিকিৎসক প্রায় নিয়মিত মাইন্ড এইড হাসপাতালে রোগী পাঠাতেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনও। পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুলকেও কৌশলে বিতাড়িত করে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন তিনি। ওই হাসপাতালে চিকিৎসার নামে অনৈতিক বাণিজ্য করা হয়—তা জেনেশুনেও তাকে সেখানে পাঠানো হয়। ঘটনার দিন মাইন্ড এইড হাসপাতালের ম্যানেজার আরিফকে ফোন করে ডা. মামুন পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুলকে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন।

৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান আনিসুল করিম। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিকের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন