নিউইয়র্কে ডা. ফেরদৌসের খন্দকারের অনৈতিক কর্ম কাণ্ডে তার বাতিল লাইসেন্স

হাকিকুল ইসলাম খোকন ,,

মিথ্যা প্রচারণার মধ্য দিয়ে কমিউনিটির সীমানা ছাড়িয়ে সুদূর বাংলাদেশেও ‘মিথ্যা করোনা হিরো’ বনে যাওয়া নিউইয়র্কের ডা. ফেরদৌস খন্দকারের ‘চিকিৎসা-লাইসেন্স’ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার নামে রোগীর শ্লীলতাহানি এবং যৌন-উত্তেজক কথকতায় অতিষ্ঠ কয়েকজন তরুণীর দায়ের করা মামলার আপসরফা করতে জ্যাকসন হাইটসের এই চিকিৎসক জীবনে আর এ পেশায় না থাকার মুচলেকা দিয়েছেন গত জুলাইয়ে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ’র বোর্ড অব প্রফেশনাল মেডিকেল কনডাক্ট (বিপিএমসি) ২৪ জুলাই ২০২৪,নির্দেশনা জারি করেছে। যা ১৫ অক্টোবর কার্যকর হয়।সুএ বাংলাদেশ  প্রতিদিন ।

অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণে সক্ষম হবেন না বলে নিউইয়র্ক এর জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিনিউ থেকে ব্রডওয়েতে স্থানান্তরিত এই চিকিৎসক স্বীকার করেছেন তার মুচলেকানামায়। উল্লেখ্য, কুমিল্লার দেবিদ্বারের সন্তান ফেরদৌস খন্দকার ২০০২ সালের ২১ জুন থেকে নিউইয়র্কে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এ সময়ে তিনি অকারণে রোগীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উত্থাপন করা হয় ২০২০ সালে। কুইন্সের ৫ তরুণী কর্তৃক কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে দায়েরকৃত এই মামলায় ডা. ফেরদৌস খন্দকারের লাম্পট্যের ধারাবিবরণী উপস্থাপিত হয়- যা সে সময় নিউইয়র্কের মূলধারার বেশ কয়েকটি পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, বেশ কবছর থেকেই ফেরদৌস খন্দকার তাদের বুকে, নিতম্বে এবং গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেছেন। এমনকি কারও কারও কাপড় সরিয়ে বুকে হাত দিতেও কসুর করেননি ফেরদৌস খন্দকার। তাদের বয়স তখন ১৪ বছরের কম হওয়ায় বিব্রত ছিলেন সরাসরি অভিযোগ করতে। সামাজিক লোকলজ্জার কারণেও এসব শিশুর অভিভাবকরা সবকিছু চেপে রাখতে চেয়েছেন।
ফেরদৌস খন্দকারের নিষ্ঠুর, অপেশাদার আচরণের ভিকটিমরা এখন প্রাপ্তবয়স্ক এবং পরিণত বয়সে সেসব দুষ্কর্মের বিচার চাইছেন- যাতে আর কেউ এমন হিংস্রতার ভিকটিম না হয়। এই মামলা দায়েরের পর ফেরদৌস খন্দকার উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। এই মামলার উদ্দেশ্য ছিল অভিযোগকারীদের থামিয়ে রাখা। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। তরুণীসহ আরও অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেরদৌস খন্দকারের অসভ্য আচরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তার কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
২৩ বছর বয়সি এক যুবতী মামলায় অভিযোগ করেন, তিনি ফেরদৌস খন্দকারের কাছে গিয়েছিলেন রক্ত পরীক্ষার জন্য। এরপর তাকে ফেরদৌস খন্দকারের খাস কামরায় নেওয়া হয়। জানানো হয়, রক্ত পরীক্ষার আগে তার সারা শরীর পরীক্ষা করতে হবে। সেখানে ওই যুবতীর কাপড় খুলতে বলা হয়। এতে বিব্রত যুবতী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও সক্ষম হননি। এরপর খোলা বুকে স্টেথোস্কোপ রেখে পরীক্ষার নামে তামাশা করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, ২৪ বছর বয়সি অন্য এক যুবতী উল্লেখ করেন, ফেরদৌস খন্দকার তার বুকের কাপড় সরিয়ে আপত্তি সত্ত্বেও শ্লীলতাহানি করেছেন।
জীবনে আর এহেন দুষ্কর্মে লিপ্ত হবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে বাঁচার অভিপ্রায়ে চিকিৎসা পেশা থেকে সরে পড়ার কথা ফেরদৌস খন্দকারের। কিন্তু ২ নভেম্বর তার ব্রডওয়ের চেম্বারের দেয়ালে থাকা সাইনে দেখা যায়, ‘রিটায়ারিং ফিজিশিয়ান ফেরদৌস খন্দকার’; তার ওপরে ‘প্লিজ ওয়েলকাম লাভিনা সিং, এমডি’ লেখা ও তার ছবি। সেখানে ফেরদৌস খন্দকারের ফোন নম্বরটিই রয়েছে। অর্থাৎ মুচলেকা প্রদানের শর্ত শতভাগ মেনে চলতেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক এই চিকিৎসক। প্রবাসীরা বলছেন, ফেরদৌস খন্দকার তো অবসরে যাননি, তিনি শাস্তি থেকে বাঁচতে চিকিৎসা পেশা থেকে চিরতরে সরে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তার লাইসেন্স কেড়ে নিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোগীর সঙ্গে অসভ্য আচরণের অভিযোগ স্বীকার করে লাইসেন্স খোয়ানোর মধ্যেই দায়েরকৃত মামলার অবসান ঘটছে না। মামলাটি এখন আরও জোরেশোরে চালু হবে। সেটি ক্রিমিনাল অফেন্স। সাক্ষী-প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হলে চড়া মাসুল দিতে হবে সাবেক এই চিকিৎসককে। উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে করোনা মহামারির সময়ে অনেক চিকিৎসকই সচেষ্ট ছিলেন রোগীর পাশে। এ ছাড়া প্রায় সবারই হেলথ ইন্স্যুরেন্স থাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। এতদ্সত্ত্বেও বিশেষ উদ্দেশ্যে ভাড়া করা গণমাধ্যমে নিজেকে ‘করোনা হিরো’ হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন তিনি।

কতিপয় বাংলাদেশী করোনা কালিন সময়ে সাফাই গেয়ে ফেরদৌস খন্দকারের পক্ষে মিথ্যা লেখালেখি করে ছিলেন সত্যকে  ঢাকা দেয়ার জন্য ।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন