লন্ডনে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউকের সভা অনুষ্ঠিত

লন্ডনে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউকে এর উদ্যোগে ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার দাবিতে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে নিয়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত /গত ১১ নভেম্বর সোমবার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ ইউকে (এইচ আর পি বি) এর উদ্যোগে সিলেট ওসমানী বিমান বন্দরকে পূর্নাঙ্গ আন্তজার্তিক বিমান বন্দরে রুপান্তরিত করে অন্যান্য এয়ার লাইন্স অবতরণের সূযোগদানের দাবীতে “কনসাল্টেশন উইথ ইউকে কমিউনিটি লিডার্স” শীর্ষক এক বিশেষ পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়। ইস্ট লন্ডনের দর্পণ মিডিয়া সেন্টারে সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক রহমত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিপুল সংখ্যক কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে উক্ত বিমান বন্দরকে পূর্নাঙ্গ আন্তজার্তিক করণের ব্যাপারে তাদের জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

তাদের মধ্যে রয়েছেন, এইচ আর পি বি এর সহ-সভাপতি শাহ মুনিম, সহ সভাপতি সাবেক স্পীকার  আহবাব হোসেন, ট্রেজারার মিসবাহ কামাল, ওসমানী ফাউন্ডেশন ইউকের চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন,  সিলেট গনদাবী পরিষদের সভাপতি শফিকুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান  মাহমুদ হাসান এমবিই, কাউন্সিলর ওসমান গণী, সাবেক মেয়র পারভেজ আহমদ, ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, সাবেক কাউন্সিলার আয়েশা চৌধুরী, সাবেক মেয়র ফারুক চৌধুরী, কাউন্সিলার ফয়জুর রহমান, এয়ার লিংক ট্রাভেলস এর সিইও সামি সানাউল্লাহ, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যান পরিষদ ইউকে এর জেনারেল সেকেটারী একাউন্টেন্ট সৈয়দ আহবাব হোসেন, আব্দুল আজিজ, আব্দুল হান্নান, আব্দুল বারী, আক্তার হোসেন,  মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন,  টিপু হোসেন, বালাগঞ্জ ওসমানী নগর এডুকেশন ট্রাস্টের এজাজ হোসেন দিলু , মাওলানা মোহাম্মদ নুরুল হক, দিলু চৌধুরী, মনজুর চৌধুরী, আবু সুফিয়ান চৌধুরী,  আনোয়ার খান, মোহাম্মদ আলী প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন  সংগঠনের সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক সলিসিটার ইয়াওর উদ্দিন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন।

সভায় নেতৃবৃন্দ এ বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তরিত করার ব্যাপারে জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করে অবিলম্বে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলি অবতরণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। সাথে সাথে সাথে ভাড়া বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার দাবিও জানান।

বক্তারা উল্লেখ করেন, সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দর নামে আন্তর্জাতিক হলেও সত্যিকার অর্থে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বলতে যা বুঝায় সামগ্রিক বিবেচনায় তা মনে হয় না। যদি সত্যিকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হত তা হলে এখানে বহুজাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইটসমূহ সিলেট থেকে সরাসরি আসা যাওয়া করতো বা সেখানে অবতরণ করার সুযোগ থাকতো। শুধুমাত্র বিমানের কয়েকটি ফ্লাইট যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া আসা ছাড়া এখানে আর কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সুযোগ নেই।

বক্তারা আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ২০২২ সালের ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর সময় প্রমাণ হয় যে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চাইলে বিদেশি যেকোনো এয়ারলাইন্স নামতে ও উঠতে পারে। কেননা সে সময় ঢাকা থেকে ডাইভার্টেড হয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেটে ওঠা-নামা করেছে। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বহুজাতিক বা আন্তর্জাতিক যেকোনো ফ্লাইট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে সক্ষম। কিন্তু একটি বিশেষ মহলের বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে এ  বিমানবন্দর সত্যিকার অর্থে ও পূর্ণাঙ্গভাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে উঠছে না। এর ফলে বহির্বিশ্বে থাকা সিলেটের যাত্রীরা অযথা বৈষম্য ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যার ফলে বৃটেন থেকে যাত্রীদের বাধ্য হয়ে চড়া দামে শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিমানের টিকিট কিনে সিলেট যেতে হচ্ছে। কাতার বা তার্কিশ এয়ারলাইন্সে যেখানে ৫০০ বা ৬০০ পাউন্ডে লন্ডন থেকে ঢাকা যাতায়াত করা যায় সেখানে বিমানে লন্ডন থেকে সিলেটে ডাইরেক্ট ফ্লাইটে যেতে গুনতে হয় ১০০০ পাউন্ড থেকে ১৪০০ পাউন্ড পর্যন্ত। অর্থাৎ দ্বিগুণ বা দ্বিগুণের কাছাকাছি। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- ইংল্যান্ড থেকে বিমান প্রথমে সিলেটে যায়। এরপর যায় ঢাকা। এখানেও ঢাকা থেকে সিলেটের ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ পাউন্ড রহস্যজনক কারণে নেয়া হয়।

সভায় উপস্থিত বক্তাদের অভিমত পূর্ণাঙ্গ ও সত্যিকার অর্থে ওসমানী বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হলে এখানে ব্যবসা-বানিজ্য,পর্যটনের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে পারে। তা ছাড়া হোটেল ব্যবসা ও চাকুরির ক্ষেত্রেও আরও বেশী সূযোগ সৃস্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উক্ত সভায় আলোচিত অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে ছিল মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ইন চিফ জেনারেল ওসমানীকে যথাযথ মূল্যায়ন করা, প্রবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন, দেশের অন্তর্বর্তী সরকারে ৫ ভাগ ও জাতীয় সংসদে ১০ভাগ প্রবাসী প্রতিনিধি সংরক্ষন রাখা প্রভৃতি।

উল্লেখ্য এ সভায় উত্থাপিত দাবিগুলি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তরবর্তী সরকারের সংশ্লিস্ট বিভাগে পাঠানো হবে বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

উক্ত সভায় সংগঠনের সাবেক সহ-সভাপতি এলাইছ মিয়া মতিন ও নছির মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং এইচ আর পি বি এর  কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট এডভোকেট মনজিল মোরসেদের অসুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন