নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার জন্য রাশিয়া প্রস্তুত। তবে যেকোনো আলোচনা রাশিয়ার সামরিক অগ্রগতির বাস্তবতাকে ভিত্তি করে হতে হবে। এমনটাই বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত গেনাডি গ্যাটিলভ।
ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা সহায়তার মাত্রার সমালোচনা করেছেন এবং দ্রুত যুদ্ধের সমাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে তিনি কিভাবে তা করবেন তা ব্যাখ্যা করেননি। যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার বিজয় কিয়েভ ও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত গেনাডি গ্যাটিলভ বলেন, ‘ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের সংকট এক রাতেই মেটাবেন। ঠিক আছে, তাকে চেষ্টা করতে দিন।
তবে আমরা বাস্তববাদী মানুষ, অবশ্যই আমরা বুঝি, এটি কখনোই ঘটবে না। তবে যদি তিনি কিছু শুরু করার বা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব দেন, তবে তা স্বাগত জানানো হবে।’
তিনি আরো জানান, এমন কোনো আলোচনা হতে হলে তা ‘ভূখণ্ড দখলের বাস্তবতায়’ ভিত্তি করে হতে হবে। এ সময় ইউক্রেনকে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে পেছনে পড়ে থাকা দেশ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
রুশ বাহিনী গত এক বছরে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে এবং এখন দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, যতক্ষণ না পুরো রুশ বাহিনী বিতাড়িত হবে ও ক্রিমিয়াসহ মস্কোর দখলে নেওয়া সব অঞ্চল ফেরত দেওয়া হবে, ততক্ষণ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। গত মাসে তিনি যে ‘বিজয় পরিকল্পনা’ উপস্থাপন করেছিলেন, তাতে এমন শর্ত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ন্যাটোতে ইউক্রেনকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও রয়েছে, রাশিয়া যার দীর্ঘকাল ধরে নিন্দা করে আসছে।
গত সপ্তাহে বুদাপেস্টে ইউরোপীয় নেতাদের কাছে জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়ার প্রতি যেকোনো সমঝোতা হবে ‘ইউক্রেনের জন্য অগ্রহণযোগ্য ও পুরো ইউরোপের জন্য আত্মঘাতী।
’
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ পশ্চিমের সঙ্গে মস্কোর সবচেয়ে বড় দ্বন্দ্ব শুরু করেছিল, যা কোল্ড ওয়ারের সময়কার পরিস্থিতির মতো ছিল। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়াকে একঘরে করার চেষ্টা চালিয়েছেন। গ্যাটিলভ ইঙ্গিত দিয়েছেন, নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তবে তিনি সম্পর্কে বড় পরিবর্তন হওয়ার ব্যাপারে সন্দিহান, যেমনটা আগেই ক্রেমলিন সতর্কতা প্রকাশ করেছিল। তিনি বলেন, ‘একমাত্র যে পরিবর্তন সম্ভব হতে পারে তা হলো আমাদের দুই দেশের মধ্যে সংলাপ, যা গত কয়েক বছর ধরে অনুপস্থিত।’
সূত্র : রয়টার্স
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন