ইংলিশ চ্যানেলজুড়ে ছোট নৌকায় করে পারাপার থামাতে ইতালির আদলে অভিবাসন ব্যবস্থাপনার কথা ভাবছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। কারণ অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাজ্যকে ‘সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে’ বলে মনে করেন তিনি।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে ভিয়েতনাম, তুরস্কসহ অন্য দেশগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা দিতে চায় যুক্তরাজ্য। এমন খবর প্রকাশ করেছে সানডে টাইমসসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
কিন্তু খবরটি সরাসরি অস্বীকার না করলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে বিভিন্ন উপায় খোঁজা হচ্ছে।
এদিকে জি২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরোতে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্টারমার। তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি বিষয়, যেখানে আমরা শুধু একটি পদক্ষেপ নিয়েই তা সমাধান করতে পারব বলে আমি মনে করি না।’
স্টারমার বলেন, ‘আমাদের পক্ষে যা করা সম্ভব, সব কিছু করতে হবে।
আমি অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি, মানবপাচারকারী চক্রগুলোকে ভেঙে দেওয়াটাই হবে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তাহলে ইংলিশ চ্যানেলে অভিবাসীবাহী নৌকাগুলো থামবে।’
সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস জানিয়েছে, ভিয়েতনাম, তুরস্কের পাশাপাশি কুর্দিস্তানের সঙ্গে আলাদা চুক্তির বিষয়ে ভাবছে যুক্তরাজ্য। আর এই চুক্তিগুলো তারা করতে চায় তিউনিশিয়া ও লিবিয়ার সঙ্গে ইতালির করা চুক্তির আদলে।
এসব চুক্তির মাধ্যমে তিউনিশিয়া ও লিবিয়া উপকূল থেকে ছেড়ে আসা ইতালিমুখী নৌকার সংখ্যা অনেক কমানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের চুক্তি যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে কতটা প্রাসঙ্গিক হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
স্টারমার অবশ্য এমন আলোচনার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেছেন, ‘তবে আমি নির্দিষ্ট একটি পদক্ষেপের ওপর আটকে থাকতে চাই না।’
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী লুইস হাইক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো বিষয় গোপন করেননি।
আমরা মনে করি, এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা, যা দূর করতে আন্তর্জাতিক সমাধান প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ কারণেই তারা দুজনই ইউরোপ ও বিশ্বজুড়ে আমাদের যেসব বন্ধুপ্রতিম দেশ রয়েছে, তাদের সঙ্গে একত্র হয়ে এই সমস্যাটি মোকাবেলায় কী করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছেন।’
উত্তর ফ্রান্সের উপকূল থেকে অভিবাসীদের ছোট নৌকায় পারাপারে সহযোগিতা দিয়ে আসা মানবপাচারকারী চক্র ভেঙে দেওয়ার ওপরই ঘুরে ফিরে জোর দিচ্ছেন স্টারমার। তিনি আবারও বলেন, ‘অভিবাসীদের উত্তর ফ্রান্সের উপকূলে নিয়ে আসা এবং সেখান থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে সহযোগিতা দেওয়া চক্রটি বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই চক্রগুলোকে থামানো ও ভেঙে দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যদি ভেঙে দেওয়া যায়, তাহলে অভিবাসীরা এই বিপজ্জনক যাত্রার বিষয়ে আগ্রহ হারাবে। আমি কখনো মেনে নিইনি, মানবপাচারে জড়িত চক্রগুলোকে ভেঙে দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানি, আগেও আমি অনেকবার এটি বলেছি। তবে আমি পাঁচ বছর প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেছি, তখন আমরা সন্ত্রাস নির্মূলে কাজ করেছি, অস্ত্র ও মাদক পাচারকারীদের আটক করেছি এবং সীমান্তের ওপারে মানবপাচারকারীদের ভেঙে দিয়েছি। পুরো বিষয়টি আমি নিজে দেখেছি। তাই আমি কখনো মনে করি না, এসব চক্রকে ভেঙে দেওয়া যাবে না।’
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন