রাশিয়ার কাছে আরো শক্তিশালী নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ রয়েছে এবং তা ব্যবহারের জন্য দেশটি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের ডিনিপ্রো শহরে একটি নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার এক দিন পরই এমন মন্তব্য করলেন পুতিন।
একটি অনির্ধারিত টিভি ভাষণে রাশিয়ান এই নেতা বলেন, ‘ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রতিহত করা যাবে না এবং ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে’ এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরো পরীক্ষা চালানো হবে।’
রাশিয়ার নয়া ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কার মেঘ।
রাশিয়ার ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার ইউক্রেন যুদ্ধকে নতুন উত্তেজনায় নিয়ে গেছে। এদিকে রাশিয়া ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করায় ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিশ্বনেতাদের ‘কঠোর প্রতিক্রিয়া’ জানানোর আহ্বান করেছেন, যাতে পুতিন ‘তার কর্মের প্রকৃত পরিণতি অনুভব করেন’। এ ছাড়া জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও চেয়েছেন।
বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-ইউক্রেন অনুসারে, কিয়েভ মার্কিন টার্মিনাল হাই অ্যালটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স (টিএইচএএডি) পেতে কিংবা বা এর প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা উন্নত করতে চাইছে।
গতকাল শুক্রবারের ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, ওরেশনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শব্দের ১০ গুণ গতিতে উড়েছিল এবং তিনি এগুলো উৎপাদনের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনের স্টর্ম শ্যাডো ও অ্যাটাক এমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জবাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ডিনিপ্রোর ওপর গত বৃহস্পতিবারের রুশ হামলাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা অস্বাভাবিক বলে বর্ণনা করেছেন এবং যে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যা তিন ঘণ্টা ধরে চলে।
ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন এটি একটি আন্ত মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) মতো।
রিস্ক অ্যাডভাইজরি কম্পানি সিবিলিনের সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেন, ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি পুতিনের অস্ত্রাগারের অন্য অস্ত্রের চেয়ে দ্রুত এবং আরো উন্নত। এটি ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষাকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের দিক সম্পর্কে অন্য বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি সতর্কতাও উসকে দিয়েছে এই যুদ্ধকে। পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, যুদ্ধ এমন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী সংঘাতের সত্যিকারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, ‘পশ্চিমাদের উচিত ভ্লাদিমির পুতিনের সতর্কতাকে গুরুত্ব দেওয়া। কারণ রাশিয়া সামরিক শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।’
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন আগে কখনোই পরমাণু যুদ্ধের হুমকি ছিল না বলে সতর্ক করেছেন। উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য সে দেশে হাজার হাজার সেনা পাঠিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের খবর দিয়েছে। সেখানে ইউক্রেনীয় সেনারা কিছু অঞ্চল দখল করছে।
জিবি নিউজ24ডেস্ক//
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন